চটজলদি বানানো যায়, পুষ্টিকরও, এমন কী কী স্ন্যাকস খেতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
খাবার খাওয়ার ভুল কিন্তু ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ। আপনি হয়তো ভাবছেন, নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করছেন, ডায়েট মানছেন, তা-ও ওজন কমছে না কেন।
আসলে কড়া ডায়েট মানতে মানতে জিভে অরুচি আসেই। মন তখন অন্য কিছুর স্বাদ চায়। টুকটাক খিদে মেটাতে প্রায়ই হাত চলে যায় চিপ্স, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, পিৎজ়ার দিকে। একটু-আধটু খেলে ওজন বাড়বে না ভেবে খেয়েই ফেলেন এ সব। আর ভুলটা হয় এখানেই। কারণ সিদ্ধ খাবারের পরে ভাজাভুজির স্বাদ পেলে খাওয়ার পরিমাণটা খেয়াল থাকে না বেশির ভাগেরই। ফলে ক্যালোরিও বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে।
যাঁরা একটু স্বাস্থ্য সচেতন, ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিশেষ করে খেয়াল রাখা উচিত এই দিকে। খুচরো খিদে মেটাতে স্ন্যাকসের তালিকায় কী কী রাখতে পারেন, সেটা জেনে রাখা ভাল।
চিয়া পুডিং
চটজলদি তৈরি হয়ে যাবে এবং আপনার খেতেও ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না, এমন খাবার খুঁজে নেওয়া দরকার। অবশ্যই সেই খাবারটি স্বাস্থ্যকরও হতে হবে। আর এই দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে চিয়া বীজের পুডিং। তৈরি করতে মিনিট পাঁচেকের বেশি সময় লাগে না।
অর্ধেক কাপ দুধে এক চামচ চিয়া বীজ মিশিয়ে নিন। চিনির বদলে ব্যবহার করুন খেজুর। চামচ দিয়ে ভাল করে নেড়ে দিন মিশ্রণটি। এটিই হল চিয়া পুডিং। এ বার এটি তুলে রাখুন ফ্রিজে। আগের দিন রাতে পুডিং বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিলে পরের দিন দেখবেন তা জমে গিয়েছে। এর উপরে ফল ছড়িয়েও খেতে পারেন। চিয়া বীজে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ভিটামিন। কাজেই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল।
মাখানা
মাখানার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই কার্বোহাইড্রেটের উৎস হলেও এই খাবার রক্তের শর্করার মাত্রা চট করে বাড়িয়ে দিতে পারে না। মাখানায় ক্যালোরির মাত্রা কম, তাই যাঁরা ওজন ঝরানোর ডায়েটে রয়েছেন, তাঁরাও কিন্তু মাখানা খেতে পারেন। সামান্য ঘি নিয়ে তাতে মাখানা কড়া করে ভেজে নিয়ে চাটমশলা, গোলমরিচ ছড়িয়ে খেতে পারেন। সন্ধের স্ন্যাকস জমে যাবে।
কালো ছোলার চাট
প্রাতরাশে কিংবা সন্ধের টিফিনে কালো ছোলার চাট বানিয়ে খেতে পারেন। ১০০ গ্রাম কালো ছোলায় ১০ গ্রামের বেশি ডায়েটারি ফাইবার থাকে। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শুধু ডায়াবিটিস নয়, ছোলা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। শশা কুচি, টম্যাটো, পেঁয়াজ দিয়ে কালো ছোলার চাট মন্দ লাগবে না খেতে।
অ্যাভোকাডো টোস্ট
রোজের খাদ্যতালিকায় অ্যাভোকাডো রাখলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। উচ্চ ফাইবারে সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন সি এবং ই। অ্যাভোকাডো পেস্ট করে তা পাঁউরুটির উপর মাখিয়ে খেতে পারেন। খেতেও ভাল, পুষ্টিকরও।
কলা ও পিনাট মাখনের টোস্ট
মাখন খেয়েও ওজন ঝরানো যায়। শুনতে অবাক লাগলেও, এটি সত্যি। তবে সাদা মাখন নয়, পিনাট মাখন। এই মাখনে রয়েছে প্রোটিন ও ফাইবার, যা অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। অন্য খাবার খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়। কলার সঙ্গে পিনাট মাখন খেতে পারেন। কলাতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম। পাউরুটি টোস্ট করে তার উপর কলা ও পিনাট মাখন মাখিয়ে খেয়ে নিন। খুব উপকারী স্ন্যাকস।
মিক্সড ফ্রুট স্যালাড
একটি পাত্রে আপেল কুচি, বেদানা, স্ট্রবেরি কুচি একসঙ্গে নিন। এতে তরমুজ, কলাও দিতে পারেন। এ বার ফলের মিশ্রণে ফেটানো দই, চাটমশলা, গোলমরিচের গুঁড়ো, মধু ভাল করে মিশিয়ে নিন তাতে। ক্রিম ছাড়াই তৈরি হয়ে যাবে ফলের স্যালাড।