বিজ্ঞানীরা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) এবং মস্তিষ্কের সমস্যার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। ছবি: প্রতীকী
ফ্যাটি লিভার যকৃতের সবচেয়ে বড় ধরনের সমস্যাগুলির মধ্যে একটি। কিন্তু সেই ফ্যাটি লিভার কেবল যকৃৎকেই নয়, বিপর্যস্ত করতে পারে মস্তিষ্ককেও। সাম্প্রতিক একটি গবেষণার ফলাফল দেখে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন কিছু গবেষক। লন্ডনের কিংস কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি অফ লুসানের অনুমোদিত রজার উইলিয়ামস ইনস্টিটিউট অফ হেপাটোলজির বিজ্ঞানীরা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) এবং মস্তিষ্কের সমস্যার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন।
গবেষকদের দাবি, গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষের দেহে কোনও না কোনও সময় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ দেখা দেয়। আর যাঁরা স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের মধ্যে এই রোগটি দেখা যায় প্রায় ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রেই। কিন্তু মস্তিষ্কের সঙ্গে যে এই রোগের যোগ থাকতে পারে, এ কথা আগে জানা ছিল না বিজ্ঞানীদের। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এনএএফএলডি-এ লিভারে যে চর্বি জমে্ সেই একই স্নেহ পদার্থ মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কের টিস্যুতে প্রদাহ তৈরি করে। উভয় ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের গুরুতর রোগ দেখা দিতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চ-এর সহযোগিতায় ইঁদুরের উপর চালানো হয়েছে গবেষণাটি। ইঁদুরগুলিকে দু’টি দলে ভাগ করে দুই ধরনের খাবার খাওয়ান বিজ্ঞানীরা। প্রথম ভাগে খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ ছিল ১০ শতাংশ ও দ্বিতীয় ভাগে ফ্যাটের পরিমাণ ছিল ৫৫ শতাংশ। তেলে ভাজা ও ঠান্ডা পানীয়ে যে মাত্রায় ফ্যাট থাকে, তার মাপেই এই মাত্রা ধার্য করা হয়। ১৬ সপ্তাহ পর দেখা যায়, যে দলের ইঁদুরগুলি বেশি ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার খেয়েছে তাদের সব ক’টিই নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এ আক্রান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে সেই ইঁদুরগুলির মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও হ্রাস পেয়েছে। দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কের রক্তবাহে বেশি পরিমাণে মেদ জমা হয়েছে। অক্সিজেন সঞ্চালনেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। শুরু হয় মস্তিষ্কের প্রদাহও। বিজ্ঞানীদের দাবি, যদি মানুষের ক্ষেত্রেও একই ফলাফল মেলে, তবে ভবিষ্যতে এই বিষয়টি মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় নতুন দিশা দিতে পারে।