ইস্ট্রোজেন হরমোন হৃদ্রোগ সামলে রাখে। প্রতীকী ছবি।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন পুরুষেরা। এই ধারণা ঠিক নয়। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা। দেশের অন্তত ৪১ শতাংশ মহিলাই হার্টের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন। প্রজননক্ষম সময়ে নারীর ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’-এ আক্রান্ত হওয়ার ভয় কম। তখন মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের উৎপাদন ঠিক থাকে। হৃদ্রোগ সামলে রাখে সেই হরমোন। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে হৃদ্রোগ বাসা বাঁধে নারী শরীরে। অত্যধিক মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ত জীবন, সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া— দৈনন্দিন যাপনের মধ্যেই নিহিত থাকে হৃদ্রোগের কারণ।
‘সেন্টারস অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুসারে, আমেরিকায় প্রতি পাঁচ জন মহিলার মধ্যে এক জন হৃদ্রোগে মারা যান। গত বছর ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও তুলে ধরা হয়েছে যে, ভারত-সহ সব দেশে মহিলাদের মধ্যে হৃদ্রোগের হার রোজ বাড়ছে।
পুরুষ আর মহিলাদের মধ্যে হৃদ্রোগের উপসর্গগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীর ক্ষেত্রে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলিই প্রকট হয়। কী কী কারণে মহিলাদের মধ্যে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?
উচ্চ রক্তচাপ
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক মহিলাই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। এ সময়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে রক্তনালিকাগুলি দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।
ধূমপানের অভ্যাস
এই অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় হৃদ্রোগের আশঙ্কা। ধূমপান বন্ধ করে দিলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমে শতকরা আশি ভাগ। অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এতেও হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়ে।
ক্রনিক কিছু সমস্যা
ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এই সব রোগের কারণে রক্তনালিকাগুলি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। রক্ত প্রবাহে বাধা তৈরি হয়। ফলস্বরূপ হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। কার্ডিয়োভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপের কারণেও মহিলাদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদ্রোগের অন্যতম বড় অনুঘটক। শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ততা এবং অবসাদের কারণে অনেক মহিলাই অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এতেও কিন্তু ঝুঁকি বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের।