জীবনে মানসিক শান্তি কী ভাবে আসবে? ছবি: ফ্রি পিক
পরিবার, কেরিয়ার, কর্মজগৎ, ব্যক্তিজীবন নিয়ে প্রায় সকলেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন। জীবনে হাজারটা চাপ, দুশ্চিন্তা। সকলেই খুঁজছেন একটু শান্তি। কিন্তু এ কোনও ছেলের হাতের মোয়া নয় যে, এক মুহূর্তেই পাওয়া যাবে। আবার চাইলে পাওয়া সম্ভব নয়, তা-ও নয়।
মানসিক শান্তি পেতে জীবনে কিছু অভ্যাস, ভাবনা, যাপনের বদল প্রয়োজন। বদলানো দরকার কিছু দৃষ্টিভঙ্গিও। তাতেই জীবন হয়ে উঠতে পারে সুন্দর। উদ্বেগ, চাপ থাকলেও মিলতে পারে শান্তি।
কখনও পালাবেন না
ভালমন্দ, ওঠাপড়া নিয়েই জীবন। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগও সেই জীবনের অঙ্গ। অনুভূতিরও ভাল বা খারাপ আছে। কিন্তু কোনও খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে মানে, সবটাই খারাপ, এমনটা নয়। তাই খারাপ অনুভূতি থেকে জোর করে পালানোর চেষ্টা না করে জীবনে যা আসছে, আসতে দিন। যন্ত্রণার কথা মনে আসবে, আবার চলেও যাবে। নতুন ভাল অনুভূতিও কিন্তু জীবনে তৈরি হবে। জীবনে আসা ভাল মুহূর্তগুলির কথা ভাবুন। নতুন ভাল অনুভূতি তৈরি হলে ক্রমশ খারাপ স্মৃতি ফিকে হয়ে আসবে।
খারাপ বা ভাল যাই হোক, জীবন চলে জীবনের মতো
জীবনে প্রাপ্তি যেমন থাকবে, অপ্রাপ্তিও থাকবে। উদাহরণস্বরূপ বলি, হয়তো কোনও ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য স্বপ্ন দেখলেন আপনি, হল না শেষ পর্যন্ত। হতাশা আসে তখন। স্বাভাবিক। তার পরেও এগিয়ে যেতে হবে। কারণ জীবন এমনই।
জীবনের সত্যিগুলি সহজে মেনে নিতে শিখলে সমস্যা কম হবে। আবার কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের সামান্য কথাই মনে লেগে যায়। তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। পান থেকে চুন খসলে মনে হয়, তাঁকে ‘নিচু’ করা হচ্ছে। এগুলি কিন্তু একান্তই ব্যক্তির ভাবনা। এই ভাবনার জন্যই সেই মানুষটি হয়তো একটু বেশি খারাপ থাকেন। মান-অপমান বোধ বা খারাপ-ভালর অনুভূতি থাকবে না, এমন নয়। তবে, কথায় কথায় প্রতিক্রিয়া, মানসিক শান্তির পথে বাধা হতে পারে।
অন্যের থেকে আশা
জীবনে দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায় অন্যের কাছ থেকে অতিরিক্ত আশা করা। কাছের মানুষের থেকে আশা প্রত্যাশিত। কিন্তু যে প্রত্যাশা করছেন সেটা কতটা যুক্তিযুক্ত ভাবা দরকার।
ভাল থাকার উপায়
১.প্রতি দিন সকালে প্রাণায়ম করা শরীরের জন্য যতটা ভাল, ততটা মনের জন্যও। ধ্যান করা সহজ নয়। চোখ বন্ধ করলেই হাজার চিন্তা এসে ভিড় করবে। তবু চেষ্টা করতে হবে, প্রথমে ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে বসে থাকার। এ ভাবে ধীরে ধীরে চেষ্টা করলেই একটা সময় আসবে যখন দেখবেন, মন শান্ত হয়ে যাচ্ছে।
২. জীবন সুন্দর। এই জীবন থেকে আপনি কত কী পেতে পারেন, সেটা ভাবতে শিখুন। ইতিবাচক ভাবনার অভ্যাস ধীরে ধীরে মনের উপর প্রভাব ফেলবে।
৩. পরিবার-পরিজন, কাছের মানুষের সঙ্গে ভাল সময় কাটান। সময় কাটানো মানেও সেটি দীর্ঘ হতে হবে এমনটা নয়, যতটা সময় কাটাচ্ছেন, তা যেন সুন্দর হয়।
৪. মনের সঙ্গে শরীরের যোগ রয়েছে। আবার শরীরের সঙ্গে খাবারের। মন ভাল রাখতে মনের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। মেজাজ ভাল করতে কামড় বসাতে পারেন ডার্ক চকোলেটে। জানা যায়, মন ভাল করতে ডার্ক চকোলেটে থাকা উপাদান বেশ কার্যকর।
৫. ডিজিটাল দুনিয়ার আকর্ষণ প্রচণ্ড। বিনোদনের জন্য মোবাইলের এক ‘ক্লিকেই’ ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ওয়েব সিরিজ থেকে অনলাইন গেম্সে ডুবে যান আট থেকে আশি। তবে সেই সময়েরও একটা সীমারেখা দরকার। ডিজিটাল দুনিয়ার আসক্তিতে ডুবলে জীবনে খারাপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। তার চেয়ে কিছুটা সময় বই পড়ে, পছন্দের রান্না করে, গান শুনে, ছবি এঁকে— যাঁর যা ভাল লাগে, তা নিয়ে কাটাতে পারেন।