ত্বকের বিভিন্ন প্রকার রোগ কী ভাবে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
রাতের পর রাত ঘুমোতে পারেন না। প্রথমে ভাবতেন, মানসিক চাপ। সমাজমাধ্যম ঘেঁটে জানতে পারলেন, মুঠোফোনের নীলচে আলোর প্রভাবেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, ঘুম না আসার জন্যে দায়ী ত্বকের যাবতীয় রোগ। বার্লিনে ‘ইউরোপিয়ান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনেরোলজি কংগ্রেস’-এর জার্নালে এই সমীক্ষাটি প্রকাশ করা হয়েছে।
ত্বকের বিভিন্ন প্রকার রোগ কী ভাবে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে— এই ছিল গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। ২০টি দেশের প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং তাঁদের বিভিন্ন প্রকার ত্বকের সমস্যা নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়। ‘অল প্রোজেক্ট’-এর এই সমীক্ষায় দেখা যায়, অনিদ্রাজনিত সমস্যায় ভুগছেন এমন ৪২ শতাংশ মানুষের ত্বকে কোনও না কোনও সমস্যা রয়েছে। তাঁদের জীবনযাত্রার মানও বেশ অনুন্নত। কর্মদক্ষতার দিক থেকেও পিছিয়ে পড়েছেন বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত প্রায় ৪৯ শতাংশ কর্মী।
ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্যে প্রাথমিক ভাবে ত্বকে দু’ধরনের লক্ষণ শনাক্ত করা গিয়েছে। প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ রাতে চুলকানির সমস্যায় দু’চোখের পাতা এক করতে পারেন না এবং প্রায় ১৭ শতাংশ মানুষ ত্বকে জ্বালার অনুভূতির কারণে ঘুমোতে পারেন না। ত্বকে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে যাঁদের, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮১ শতাংশই সকালে ঘুম থেকে উঠতে ক্লান্তি বোধ করেন। কাজের মধ্যে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসে ঝিমোন ৮৩ শতাংশ। ঘন ঘন হাই তোলেন প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ।
সমীক্ষার প্রধান চিকিৎসক চার্ল্স তায়েব বলেন, রাতে ঘুম ভাল না হলে, শরীর ভাল না থাকারই কথা। তাই অন্যান্য রোগ এবং সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য অনিদ্রাজনিত সমস্যা নিরাময় করা প্রয়োজন। কারও ত্বকের সমস্যা চোখে পড়লে আগে থেকেই সাবধান হওয়া যায়। সমীক্ষার সঙ্গে জড়িত আরও এক চিকিৎসক ব্রুনো হালিয়োউয়ার মতে, ঘুম হচ্ছে না বলে যে সব রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন, তাঁদের ত্বকে কোনও রকম সমস্যা রয়েছে কি না, আগে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।