লিভারের অসুখ ঠেকাতে মেনে চলুন ৫ নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।
জীবনযাত্রায় অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীচর্চায় দিকে খেয়াল না রাখা, অতিরিক্ত মদ্যপান— এগুলিই যদি আধুনিক জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকে, তা হলে তার ফল অবশ্যই ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো মারণরোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কিছু বদ অভ্যাস ও ভুলের কারণেই শরীরে বাসা বাঁধে লিভারের অসুখ। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাদের বাবা-মায়েরা যদি প্রথম থেকেই সচেতন হন, তা হলে জীবনশৈলীর উপর ছোটবেলা থেকেই নিয়ন্ত্রণ তৈরি হবে। বড়দেরও উচিত লিভার ভাল রাখার উপায়গুলি আয়ত্তে আনা। লিভার সুস্থ রাখতে কী কী করবেন?
১) ওজন ঝরান: কেবল ফিট থাকতেই নয়, লিভার সুরক্ষিত রাখতে চাইলেও কিন্তু ওজন বাগে রাখা জরুরি। আমাদের শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। বাড়ির খাবারের বদলে রেস্তরাঁর রেড মিট, বাইরের ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি ঝোঁক, লিভারের অসুখের ঝুঁকি বাড়ায়। এর জেরেই শরীরে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে। লিভারের পক্ষে এই ফ্যাট মোটেই ভাল নয়। তাই বাড়ির খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ওজন কমাতে কেবল খাওয়াদাওয়া লাগাম টানলেই চলবে না, শরীরচর্চাতেও নজর দিতে হবে। জিমে যেতে না চাইলে রোজ নিয়ম করে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করুন।
২) ঘুম সম্পূর্ণ করুন: সারা দিন কর্মব্যস্ততা আর রাত জেগে মোবাইলে চোখ রেখে ওয়েব সিরিজ় দেখা— সব মিলিয়ে ঘুমের সঙ্গে আপস। রোজ তিন থেকে চার ঘণ্টাও ঘুম হয় না এই কারণে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ঘুমের অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে লিভারের উপরে। তাই লিভার ঠিক রাখতে হলে ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপোস নয়।
৩) বেশি করে জল খান: লিভার ভাল রাখতে জলের জুড়ি মেলা ভার। শরীর থেকে যতটা দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে জল খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম জলে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই জল খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
৪) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধে না: সামান্য ব্যথা হলেই মুড়ি-মুড়কির মতো ব্যথার ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘুম না হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন। লিভারের রোগ ঠেকাতে এই সব অভ্যাসে বদল আনা জরুরি।
৫) কফি খান: বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফি দিনে ৩ কাপ খেলে লিভারের অসুখ ঠেকিয়ে রাখা যায়। অতিরিক্ত ক্যাফিন শরীরের ক্ষতি করে, তাই ঘন ঘন ঘন কফি খেলে আবার বিপদ হতে পারে।