লেবু জলের গুণাগুণ ছবি: সংগৃহীত
লেবু একটি সাইট্রাস জাতীয় ফল। সাইট্রাস ফলের মধ্যে ভিটামিন সি বেশি থাকে। এটি একটি প্রাথমিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা কোষকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্ল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন ধরেই লেবু জল খাওয়াকে একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বলেই গণ্য করা হয়।
১। হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো
ভিটামিন সি সংবহনতন্ত্রের রোগ, রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। লেবু ভিটামিন সি এর একটি ভাল উৎস। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি লেবুর রসে প্রায় ১৮.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-র পরিমাণ দৈনিক ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম।
২। ওজন কমাতে
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লেবুতে পাওয়া যায় পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ইঁদুরের উপর করা পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই উপাদানটি স্থূলতা প্রতিরোধ করে ও অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ
কেউ কেউ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিদিন সকালে লেবু জল পান করেন। ঘুম থেকে উঠলে উষ্ণ লেবু জল পান করা পাচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করতে পারে। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলে, লেবুর টক স্বাদ শরীরের ‘অগ্নি’কে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। যা খাবার আরও সহজে হজম করতে সহায়তা করে এবং ‘টক্সিন’ জমা হওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।
৪। ডায়াবিটিস রোধ
ইঁদুরের উপর করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগগুলি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে এই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
৫। ত্বক ভাল রাখা
লেবুতে প্রাপ্ত ভিটামিন সি ত্বকের বলিরেখা, বার্ধক্যজনিত শুষ্ক ত্বক এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে গেলে বলিরেখার প্রবণতা দেখা দেয়। সকালে এক গ্লাস লেবুজল এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৬। মুখের গন্ধ হ্রাস
আপনি কি কখনও রসুনের গন্ধ বা অন্য কোনও তীব্র গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে হাতে লেবু ঘষেছেন? রসুন, পেঁয়াজ বা মাছের মতো তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে তৈরি হওয়া নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের ক্ষেত্রেও একই প্রতিকার প্রযোজ্য। খাবারের পরে এবং সকালে এক গ্লাস লেবু জল পান করে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এড়ানো যেতে পারে। তা ছাড়া লেবু লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয় না ও ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধর আশঙ্কা কমে।
৭। কিডনির পাথর প্রতিরোধ
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনির পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। সাইট্রেট, সাইট্রিক অ্যাসিডের একটি উপাদান, যা প্রস্রাবের অম্লত্ব হ্রাস করে। এমনকি এটি ছোট পাথর ভেঙ্গে ফেলতেও সহায়তা করতে পারে। সেই সঙ্গে পাথর প্রতিরোধ ও নির্গত করার জন্য প্রয়োজনীয় জলও পাওয়া যায় লেবু জল পান করলে।