মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকরা সম্প্রতি ‘নিভোলুম্যাব’ নামের ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেন। ছবি: প্রতীকী
ক্যানসার চিকিৎসায় ক্রমেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে ইমিউনোথেরাপি নামের এক চিকিৎসাপদ্ধতির। কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের বাইরে এই চিকিৎসা আশার আলো দেখাচ্ছে বহু ক্যানসার রোগীকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই চিকিৎসা পদ্ধতি এত ব্যয়বহুল যে সাধারণ মানুষের পক্ষে তার সুফল নেওয়া কার্যত অসম্ভব। সেই ছবিতে এ বার কিছুটা হলেও বদল আনতে পারে মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাম্প্রতিক এক আবিষ্কার। চিকিৎসক বিজয় পাতিলের নেতৃত্বে ‘নিভোলুম্যাব’ নামের একটি ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গিয়েছে, ওষুধটি এক দশমাংশ হারে ব্যবহার করলেও সুফল পেতে পারেন ‘হেড অ্যান্ড নেক’ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা।
‘লো-ডোজ় নিভোলুম্যাব’ নামের এই চিকিৎসা পদ্ধতির কথা প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানপত্রিকা ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজিতে। টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের দলটি মেটাস্ট্যাটিক হেড এবং নেক ক্যানসারে আক্রান্ত ১৫১ জন রোগীর উপর পরীক্ষা চালায়। পরীক্ষাতে রোগীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলে ৭৬ জন রোগীকে রাখা হয়। এই ভাগে সব রোগীকে অল্প মাত্রায় ‘নিভোলুম্যাব’ নামের এই ওষুধটি দেওয়া হয়। বাকি ৭৫ জনকে কেবল মাত্র প্রথাগত কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। দেখা যায় যাঁরা কেমোথেরাপির সঙ্গে নিভোলুম্যাব ওষুধটি অল্প পরিমাণে নিয়েছেন, তাঁদের ১ বছর পেরিয়ে আরও বেশি দিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪৩.৪ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক ভাবে এত দিন এই ওষুধটি ব্যবহৃত হত অনেকটাই বেশি মাত্রায়। সপ্তাহে দু’বার ২৪০ মিলিগ্রামের ‘ফ্ল্যাট ডোজ়’ দিতে হত রোগীদের। এই গবেষণায় প্রতি ৩ সপ্তাহে এক বার ২০ মিলিগ্রাম ওষুধ প্রয়োগ করেন চিকিৎসকরা। তাতে যে সাফল্য মিলেছে তা দেখে চিকিৎসকদের দাবি, এতে প্রায় ৯৫ শতাংশ কমে যাবে চিকিৎসার খরচ। আগে বছরে প্রায় বাষট্টি লক্ষ টাকার মতো খরচ হত এই চিকিৎসায়, এখন বার্ষিক ৩.৫ লক্ষ টাকায় নেমে আসবে সেই খরচ। ফলে অনেক বেশি মানুষ চিকিৎসা করাতে পারবেন, আশা তাঁদের।