Surrogacy

নয়নতারা-ভিগ্নেশের সন্তানদের নিয়ে বিতর্ক কেন? আইন অনুযায়ী কারা সারোগেসির পথে হাঁটতে পারেন?

বিয়ের অনেক আগে থেকেই বাবা-মা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অভিনেত্রী নয়নতারা আর পরিচালক ভিগ্নেশ শিবন? প্রশ্ন নানা মহলে। কেউ যদি সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেন, তা হলে তা নিয়ে এত হইচই কেন?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ১৩:০৭
নেটমাধ্যমে তারকা জুটির যমজ পুত্রের ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে নেটজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে।

নেটমাধ্যমে তারকা জুটির যমজ পুত্রের ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে নেটজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের চার মাসের মাথায় যমজ সন্তানের অভিভাবক হওয়া নিয়ে অভিনেত্রী নয়নতারা আর পরিচালক ভিগ্নেশ শিবনকে নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। এর উত্তর খুঁজতে তাঁদের তলব করতে পারে তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য দফতর, এমনই জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুব্রহ্মণ্যম।

নেটমাধ্যমে তারকা জুটির যমজ পুত্রের ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে নেটজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। নির্ঘাত সারোগেসির মারফত জন্ম হয়েছে তাদের, এমনটাই মনে করছেন নেটাগরিকদের একাংশ। তবে কি বিয়ের অনেক আগে থেকেই বাবা-মা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারকা জুটি? না কি কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল নয়নতারার? নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে। তাঁদের কাছ থেকে এই বিষয়ে উত্তর চাইছে প্রশাসনও। কিন্তু কেউ যদি সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেন, তা হলে তা নিয়ে এত হইচই হওয়ার কারণ কী? কী বলছে ভারতীয় আইন?

Advertisement

বলিউডের তারকা শাহরুখ-করণ-প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাসের দৌলতে গর্ভ ভাড়া বা ‘সারোগেসি’ এখন আর ভারতীয়দের কাছে অচেনা শব্দ নয়। এ ক্ষেত্রে মা নিজে সন্তানধারণ করেন না। তাঁর বদলে অন্য এক মহিলা ধারণ করেন সেই সন্তানকে। সন্তানধারণ যিনি করছেন, তিনি হলেন সেই শিশুর সারোগেট মা। বিশেষ করে যে সকল মহিলার শরীর সন্তানধারণের জন্য প্রস্তুত নয়, তাঁরাই বিশেষ করে এই পদ্ধতির সাহায্য নেন। তবে এ ছাড়াও নানা কারণে সন্তানধারণের এই পদ্ধতি বেশ প্রচলিত বিশ্ব জুড়ে। তবে শুনতে যত সহজ মনে হয়, এই পদ্ধতি আসলে ততটাই জটিল। নানা ধরনের নিয়মকানুন, চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিলতা পেরিয়ে এই পদ্ধতিতে সন্তানসুখ পান দম্পতি। এর সঙ্গে রয়েছে নানা আইনি জটিলতাও।

সারোগেসির নানা ধরন এবং নিয়ম রয়েছে। এ পদ্ধতি বেছে নেওয়ার আগে তা জানা জরুরি। মূলত দু’ধরনের সারোগেসি হয়। যেমন— ট্র্যাডিশনাল সারোগেসি, যেখানে বাবার শুক্রাণু কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রতিস্থাপিত হয় সারোগেট মায়ের শরীরে। সারোগেট মায়ের ডিম্বাণুই ব্যবহৃত হয়। প্রয়োজনে অন্য পুরুষের শুক্রাণুও ব্যবহার করা হয়। আর অন্য পদ্ধতি হল জেস্টেশনাল সারোগেসি। এ ক্ষেত্রে বাবার শুক্রাণু এবং মায়ের ডিম্বাণু ব্যবহার করা হয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে ফার্টিলাইজ করে তা প্রতিস্থাপন করা হয় সারোগেট মায়ের জরায়ুতে।

ভারতে সারোগেসি সংক্রান্ত কী কী বিধিনিষেধ রয়েছে?

১) টাকার বিনিময়ে কারও সন্তানধারণ করার পদ্ধতিকে ‘বাণিজ্যিক সারোগেসি’ বলে। এটি নানা দেশেই প্রচলিত। তবে ভারতে এর পদ্ধতির উপর কড়া বিধিনিষেধ রয়েছে।

২) এ দেশে সারোগেট মা হতে পারেন সন্তানের অভিভাবকের খুব নিকট কোনও আত্মীয়।

৩) যে হেতু বাণিজ্যিক সারোগেসি নিষিদ্ধ, তাই সন্তানের বাবা-মা সারোগেট মায়ের কেবল চিকিৎসার খরচটুকু দিতে পারেন। তা ছাড়া আর কোনও টাকাপয়সার আদানপ্রদান করা বেআইনি।

৪) সারোগেট মায়ের বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৩৫-এর মধ্যে।

৫) এক বারের বেশি সারোগেট সন্তান ধারণ করতে পারবেন না কেউ।

৬) যে সব দম্পতি বিয়ের পাঁচ বছর পরেও শারীরিক অক্ষমতার কারণে সন্তানধারণ করতে না পারেন, তাঁরাই কেবল সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বাবার বয়স ২৬-৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। এবং মায়ের বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৫০ এর মধ্যে।

৭) যে সব দম্পতির ইতিমধ্যেই সন্তান রয়েছে, তাঁরা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া সারোগেসির মাধ্যমে ফের সন্তানধারণ করতে পারবেন না।

৭) কেউ যদি বাণিজ্যিক সারোগেসির পথ বেছে নেন, তবে তাঁদের পাঁচ বছর জেল এবং পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। একই কাজ এক বারের বেশি করলে ১০ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement