সাধারণ কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ, না কি মলাশয়ের ক্যানসার, বুঝবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরেই ছিল। ঠান্ডার সময়ে এই ধরনের সমস্যা গুরুতর আকার নেয়। প্রথম দিকে মলত্যাগ করতে গেলে হালকা রক্তপাত হয়। ক্রমশ রক্তপাতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। অনেকেই এই ধরনের সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে সঙ্কোচ বোধ করেন। আবার অনেকেই এই ধরনের সমস্যাকে সাধারণ ভেবে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন এই ধরনের সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা কিন্তু কোলন ক্যানসার বা মলাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ষাটোর্ধ্বদের মধ্যে এই অসুখের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি হলেও সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে ইদানীং অল্পবয়সিদের শরীরেও অতর্কিতে হানা দিচ্ছে কোলোরেক্টাল ক্যানসার।
দিল্লি স্টেট ক্যানসার ইনস্টিটিউট-এর এক দল বিজ্ঞানী এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তাঁদের মতে, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, শারীরিক কসরতের অভাব, বাড়তি ওজন, ঘরে বানানো টাটকা খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার খাওয়ার প্রবণতা, ধূমপান, মদ্যপান এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের মতো কারণে কোলন ক্যানসার হতে পারে। তা ছাড়া পরিবারে কারও মলাশয়ের ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। মলের সঙ্গে রক্ত বেরোলে বেশির ভাগ মানুষই পাইল্স বলে ভুল করেন। অর্শ রোগীদের ক্ষেত্রে যে রক্তপাত হয়, তার রং সাধারণত লাল। কিন্তু কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই রক্ত কালচে রঙের হয়। তা ছাড়া হঠাৎ যদি মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কিছুতেই সারতে না চায়, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে?
১) তলপেটে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা এই রোগের উপসর্গ হতে পারে।
২) কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে অন্ত্র থেকে রক্তপাত হয়, তাই রক্তাল্পতা তৈরি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। রক্তাল্পতা ডেকে আনে ক্লান্তি।
৩) দিনে কত বার মলত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হয়, আচমকা তার তারতম্য ঘটলে কোলন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে।
৪) মলের রং পরিবর্তন, পেটে গ্যাসের সমস্যা কিছুতেই না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৫) সারা ক্ষণ বমি বমি ভাব, গা গুলিয়ে ওঠা, ওজন কমে যাওয়াও কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।