Social Isolation And Premature Death

বাস্তবে নয়, ফেসবুকে বন্ধু বানাতে বেশি আগ্রহী? একা থাকার প্রবণতা আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে আপনার

নেচার হিউম্যান বিহেভিয়র পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণায় একাকিত্ব, সামাজিক নিভৃতবাস এবং সময়ের আগেই মৃত্যু— এই তিনটি বিষয়ে কী যোগসূত্র রয়েছে তার খোঁজ চলেছে। কী বলছে সমীক্ষা?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৪:০৭
Facebook

একাকিত্বের কারণে বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। ছবি: শাটারস্টক

একাকিত্ব কম বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। আধুনিক নগর জীবনের গতিবেগ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে একাকিত্ব। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই মানসিক সমস্যাকে হেলাফেলা করে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা। অনেকেই উপলব্ধি করেন না যে, কোনও ধরনের মানসিক সমস্যা মনের অসুবিধাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ক্রমেই শরীর-মন সব কিছুকেই গ্রাস করে। পাশাপাশি, নেতিবাচক প্রভাব ফেলে আক্রান্তের সামগ্রিক জীবনযাপনে। নেচার হিউম্যান বিহেভিয়র প্রত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাটিতে একাকিত্ব, সামাজিক নিভৃতবাস এবং সময়ের আগেই মৃত্যু— এই তিনটি বিষয়ে কী যোগসূত্র রয়েছে, তাই নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। ৬ মাস থেকে ২৫ বছর বয়সি প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা সমাজ ও সামাজিকতা থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন, তাঁদের কম বয়সে মৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি।

গবেষকদের মতে, পার্থিব সাফল্যকেই জীবনের লক্ষ্য ভাবা ঠিক নয়। পেশাগত জীবনের ইঁদুরদৌড়ের মাঝে পড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষজন সামাজিক মেলামেশার সুযোগকে অবহেলা করেন। এর ফলে সাফল্য এলেও তাকে উপভোগ করার মতো মানসিক শান্তি অধরা থেকে যায় অনেক ক্ষেত্রেই।

Advertisement

অনেকেই ভেবে থাকেন চারপাশে বহু মানুষের ভিড় থাকলে কেউ একাকিত্ব বোধ করতে পারেন না। এটি একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা বলেও জানাচ্ছে বিভিন্ন সমীক্ষা। বন্ধুদের সংখ্যা বা অফিসের জনপ্রিয়তা, কোনও কিছুই একাকিত্বের পথ্য নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে সমাজমাধ্যমে মানুষ বন্ধু খোঁজে, সেই সমাজমাধ্যমই আরও দূরে ঠেলে দেয় বাস্তব থেকে।

ইট, কাঠ, পাথরের জঙ্গলে নিজের জায়গা ধরে রাখতে অনেকেই নানা রকম মুখোশ পরে নেন। নিজের আসল ব্যক্তিত্বের পরিচয় নিয়ে তৈরি হয় হীনম্মন্যতা। নিজের থেকে আলাদা কাল্পনিক কোনও এক আদর্শ মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে সহজ স্বভাবিকত্ব নষ্ট হয়। ফলে ক্রমশ কোনও কিছুকেই নিজের অন্তরের অংশ বলে মনে হয় না। এই বোধ ক্রমে বাড়তে বাড়তে মানসিক অবসাদের রূপ নিতে থাকে আক্রান্তের অজান্তেই।

Loneliness

যে সমাজমাধ্যমে মানুষ বন্ধু খোঁজে, সেই সমাজমাধ্যমই আরও দূরে ঠেলে দেয় বাস্তব থেকে। ছবি: শাটারস্টক

কিন্তু কী ভাবে মিলতে পারে মুক্তি? মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই ধরনের সমস্যায় সবের আগে বুঝতে হবে নিজের মনকে। চিনতে হবে নিজের ভাল লাগা-ভাল থাকার ক্ষেত্র। মানসিক ভাবে বিচ্ছিন্ন বোধ করলে, সাফল্যও সাফল্য বলে মনে হয় না। কাজেই সাফল্যের থেকেও দিন শেষে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শান্তি। কাজের ফাঁকে সময় বার করে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলিতে যাওয়া শুরু করুন, আর পাঁচজনের সঙ্গে কথা বললেও মন ভাল থাকবে। ফেসবুকে নয়, বাস্তব জীবনে এক জন ভাল বন্ধুর খোঁজ করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement