যাঁদের কোনও দিনই হার্টের সমস্যা ছিল না, তাঁদেরও কোভিডের কারণে ‘কার্ডিয়াক ইনজুরি’ হতে পারে। ছবি-প্রতীকী
কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর অনেক রোগীর হৃদ্যন্ত্রের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কোথাও কিছু নেই, হঠাৎ বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা। কিংবা হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেল করা, হৃদ্যন্ত্রে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া, হৃদ্যন্ত্র সংলগ্ন পেশির ক্ষয়, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। করোনা পরবর্তী সময়ে হার্টের এই সব সমস্যা থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ছ’মাস অন্তর কিছু পরীক্ষা করা দরকার।
কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেই যে হৃদ্রোগের সমস্যা দেখা দেবে, এ রকম নয়। হতেই পারে সেরে ওঠার অনেক দিন পর এ রকম কোনও সমস্যা হল। বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে, কোভিড থেকে সেরে ওঠা প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৭৮ জনেরই হয় হৃদ্যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিংবা হৃদ্রোগ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিয়েছে। যাঁদের কোনও দিনই হার্টের সমস্যা ছিল না, তাঁদেরও কোভিডের কারণে ‘কার্ডিয়াক ইনজুরি’ হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হচ্ছে। করোনা হওয়ার আগে যাঁদের কোনও হার্টের সমস্যা ছিল না, এ রকম প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
কী করা উচিত?
সমস্যা হচ্ছে বুঝতে পারলে আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ছাড়া, যাঁদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান ও পরীক্ষা করান। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর ছ’মাস অন্তর ইসিজি, চেস্ট এক্স রে, লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করানো জরুরি। বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবিটিস ও রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অবশ্যই এটা করতে হবে। নিয়মিত এ ভাবে পরীক্ষা করালে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে হৃদ্যন্ত্রের কোনও ক্ষতি হলে আগেই ধরা পড়বে।
এ ছাড়া রোজের অভ্যাসে কী কী বদল আনার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা?
১) অ্যালকোহল এবং ক্যাফিনের প্রতি আসক্তি থাকলে সেই অভ্যাসে এখনই রাশ টানুন।
২) পুষ্টিকর খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে। রোজের খাদ্যতালিকায় বেশি করে ফল, শাক-সব্জি আর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
৩) চিনি, নুন, ফ্যাটজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৪) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি। সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করলে উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ভারী শরীরচর্চা করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৫) রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ছ’মাস অন্তর রক্তে শর্করার মাত্রা মাপতে হবে। আর যাঁদের ডায়াবিটিস আছে, তাঁদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।