Antibiotics Side-Effects

অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে বিপদ ডাকছেন ভারতীয়রা, দাবি ল্যানসেটের সমীক্ষায়

নিজের জানা একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স করলেই হবে, এমনই ধারণা অনেকের। ছোটখাটো সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ভুলতে বসেছেন কেউ কেউ। এই অভ্যাস বিপদ বাড়াচ্ছে, করাল একটি সমীক্ষা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:২২
কোন অ্যান্টিবায়োটিক বেশি খান ভারতীয়রা?

কোন অ্যান্টিবায়োটিক বেশি খান ভারতীয়রা? ছবি-প্রতীকী

পেটের গোলমাল হোক বা দিন কয়েকের জ্বর, ওষুধ তো জানাই আছে! নিজের জানা একটি অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স করলেই হবে— এমন ধারণা অনেকের আছে। ছোটখাটো সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ভুলতেই বসেছেন কেউ কেউ। ঘরের চেনা ওষুধেই কাজ সারেন। আগে যে ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকে কমেছিল অসুখ, সে সবই নেন হাতের মুঠোয়। খাওয়ার নিয়মকানুনও জানা থাকে। তাই অন্যকেও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার আগেও দু’বার ভাবার অভ্যাস হয় না।

সম্প্রতি ল্যানসেটের একটি সমীক্ষার ফল বলছে, কোভিডের আগে এবং কোভিড চলাকালীন ভারতীদের মধ্যে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার অত্যধিক হারে বেড়েছে। এ সব ওষুধের মধ্যে বেশির ভাগই কেন্দ্রের ওষুধ নিয়ামক সংস্থার দ্বারা অনুমোদিত নয়। গবেষকরা ভারতের কাছে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতি এবং নিয়মকানুনের সংস্কারমূলক আইন আনার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।

Advertisement
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। ছবি-প্রতীকী

সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, দেশের জাতীয় এবং রাজ্য স্তরের ওষুধ নিয়ামক সংস্থাগুলির মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবের কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রাপ্যতা, বিক্রয় এবং সেবন— এই সব ব্যাপারই জটিল হয়ে যায়। অকারণ ও অত্যধিক মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে সুপারবাগসের মতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও চিকিৎসককে। যখন-তখন ইচ্ছা মতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে নিতে শরীরে তৈরি হচ্ছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স’ (এএমআর)। আগামী দিনে তা-ই গুরুতর বিপদ ডেকে আনে।

সুপারবাগস কী?

ঘন ঘন কোনও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে শরীরে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দিনের পর দিন সেই ওষুধ নিলে একটি সময়ের পর তা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। কারণ, শরীরে উপস্থিত ব্যাক্টেরিয়া সেই ওষুধের সঙ্গে লড়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে। দিনে দিনে তা হয়ে ওঠে আরও শক্তিশালী। অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন সেই জীবাণুদেরই চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ‘সুপারবাগস’।

কোন অ্যান্টিবায়োটিক বেশি খায় ভারতীয়রা?

ল্যানসেটের সমীক্ষা মতে, ভারতীয়দর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ৫০০ খাওয়ার চল সবচেয়ে বেশি। আর তার পরেই সেফিক্সাইম ২০০ নামক ওষুধটির উপর নির্ভর করে ভারতীয়রা। কিছু অসুখের চিকিৎসা করতে গেলে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা করতে হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে বাতিল অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

কী করণীয়?

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। প্রাকৃতিক উপায়ে খাওয়াদাওয়ার প্রতি নজর দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। খাওয়ার অনিয়ম হলে অপুষ্টি ঠেকাতে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন। শরীরচর্চায় মন দিন। তাতেই বাড়বে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা। দূরে থাকবে রোগবালাই।

আরও পড়ুন
Advertisement