‘হনিমুন সিস্টিটিস’ থেকে মুক্তি পাবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমা নিয়ে অনেকের অনেক রকম শখ-আহ্লাদ থাকে। কোথায় ঘুরতে যাবেন, কোন হোটেলে থাকবেন, কোন জামাকাপড় পরবেন— মধুচন্দ্রিমার রোমাঞ্চকর দিনগুলির কথা ভাবলেই হাজার রকম কল্পনাও চলে মনে মনে। কিন্তু বিয়ের পরই শুরু নতুন সমস্যা। যোনিতে অস্বস্তি, প্রস্রাবে জ্বালা। উপভোগ করার বদলে যৌনতা ঘিরে তৈরি হয় আতঙ্ক। বিয়ের পর অনেক মেয়েরই এই সমস্যা হয়। সাধারণত মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে এই সমস্যা দেখা দেয় বলে একে ‘হনিমুন সিস্টিটিস’ বলা হয়। তবে এটি আদতে এক প্রকার ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ বা ইউটিআই। কী এই রোগ? কী করেই বা পাবেন মুক্তি?
কেন হয় হনিমুন সিস্টিটিস?
মিলনের সময়ে এসকেরিয়া কোলি ব্যাক্টেরিয়া ইউরেথ্রা দিয়ে ব্লাডারে পৌঁছয়। যোনির আশপাশেও পৌঁছয় কিছু পরিমাণে। এর ফলে ইউরিনারি ট্র্যাক্টে ইনফেকশন হয়। ৩০ শতাংশ মহিলার এই সমস্যা হয়। মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভুগলেও ছেলেদের যে একেবারেই হয় না, এমনটা নয়।
এই রোগে আক্রান্ত হলে ঠিক কী কী উপসর্গ হতে পারে?
১) প্রস্রাবের সময় জ্বালা, এই রোগের প্রধান উপসর্গ।
২) যোনিতে দুর্গন্ধ।
৩) ঘোলাটে প্রস্রাব।
৪) পেটে তীব্র যন্ত্রণা, শ্রোণির হাড়ে খিঁচ।
৫) কারও-কারও ক্ষেত্রে সংক্রমণের জন্য জ্বরও আসে।
৬) প্রস্রাব করার পরও মনে হয় প্রস্বাবের বেগ আসছে।
হনিমুন সিস্টিটিস হলে কী করবেন?
১) মূত্রনালিতে সংক্রমণ হলে প্রচুর জল খেতে হবে।
২) তেল মশলাযুক্ত খাবার, ভাজাভুজি, অ্যালকোহল, সোডা, মিষ্টি পানীয়, কফি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। অ্যাসিডযুক্ত ও প্রোটিন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন কিছু দিন।
৩) পেটের যন্ত্রণা কমানোর জন্য হট ওয়াটার ব্যাগ বা গরম জলে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে সেঁক দিতে পারেন। ব্যথা বাড়লে চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে বেদনানাশক ওষুধও খেতে পারেন।
৪) সঙ্গম করার পর প্রস্রাব করে নিন, শরীরের ব্যাক্টেরিয়া বেরিয়ে যাবে।
৫) সংক্রমণ বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে পারেন।
সঙ্গমের সময়ে ঠিকমতো পরিচ্ছন্নতা মেনে না চললে, হনিমুন সিস্টিটিসের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। দু’জনেই পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিন। খুব সমস্যা হলে ওই সময়ে কিছু দিন মিলন থেকে বিরত থাকুন। হঠাত্ এই ধরনের সমস্যা হলে অনেক সময়ই মহিলারা বড়সড় কোনও কিছুর আশঙ্কা করে ভয় পান। সঙ্গম যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠলেও মুখে কিছু বলেন না। ফলে সমস্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই সমস্যা হলে লজ্জা পেলে চলবে না। এই সমস্যা খুবই স্বাভাবিক। একটু সাবধান থাকলেই সেরে যাবে। লজ্জা না পেয়ে তাই সঙ্গীকে খোলাখুলি জানান আপনার সমস্যার কথা। এর পাশাপাশি দেরি না করে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।