সন্তানের ওজন কি লাগামছাড়া? প্রতীকী ছবি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু) বলছে, ১৯৭৫ থেকে ২০১৬— এই সময়কালে পাঁচ থেকে ১৯ বছর বয়সি শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার সমস্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। যেখানে ১৯৭৫ সালে স্থূলতায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ছিল চার শতাংশ, সেখানে ২০১৬ সালে এই পরিসংখ্যান বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ শতাংশ। কোভিড পরিস্থিতির পর আরও বেড়েছে সমস্যা। গৃহবন্দি দশা, পড়াশোনা চলেছে অনলাইনে। মাঠে খেলাধুলোও কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুতগতিতে।
কী ভাবে বুঝবেন? স্থূলতার সমস্যায় ভুগছে আপনার সন্তান?
‘ওবেসিটি’ বা স্থূলতার সমস্যা আছে কি না, তা বোঝার পদ্ধতি হল ‘বডি মাস ইনডেক্স’(বিএমআই) মেপে দেখা। কোনও শিশুর বিএমআই যদি ৩০-এর উপর থাকে তবে সেই শিশু স্থূলতার সমস্যায় ভুগছে বলে ধরতে হবে। ছোটবেলা থেকে স্থূলতা গ্রাস করলে শরীরে বিপাক-হার কমতে থাকে। ফলে বিগড়ে যেতে পারে ইনসুলিনের ভারসাম্য। দেখা দিতে পারে ডায়াবিটিস, পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম) ও পেটের গোলযোগের মতো মতো নানা শারীরিক সমস্যা। স্থূলতায় ভোগা শিশুদের অনেককেই স্কুলে বা খেলার মাঠে নানান বিদ্রূপের শিকার হতে হয়। ফলে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে তাদের। সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন সুস্থ জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
শিশুর মাত্রাতিরিক্ত ওজনের সমস্যা কমাতে কী করতে পারেন বাবা-মায়েরা?
১। নিয়মিত শরীরচর্চা করান সন্তানকে। এখন স্কুল, পড়াশোনা,পরীক্ষা— সব মিলিয়ে মাঠে দৌড়ঝাঁপ করার সুযোগ অনেকটাই কমেছে শিশুদের। খেলাধুলো কমে যাওয়া শারীরিক দিক থেকে ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজ যদি অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা যায়, তবে অনেকটাই কমে স্থূলতার আশঙ্কা। শরীরচর্চা মানে শুধু ব্যায়াম নয়। সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা কিংবা দৌড়নোর অভ্যাসও ব্যায়ামের মতোই কার্যকর।
২। শিশুরা শাক-সব্জি খেতে মোটেই ভালবাসে না। পরিবর্তে ফাস্টফুড, ভাজাভুজি, মিষ্টি জাতীয় খাবারই তাদের বেশি পছন্দ। এই ধরনের খাবার শুধু শিশু নয়, সব বয়সের মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। বাচ্চাদের বেশি করে শাক-সব্জি, ফল-মূল খাওয়ান। যখন-তখন খিদে পেলে ফল কিংবা কাঠবাদামের মতো খাবার খাওয়ান। খিদেও মিটবে, স্থূলতার আশঙ্কাও কমবে।
৩। ফাস্ট ফুড থেকে দূরে রাখুন সন্তানকে। পিৎজা, বার্গার, চিপসের মতো খাবার যেন খাদ্যতালিকায় না থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখুন। এই খাবারগুলি ওজন অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। রাস্তায় বেরিয়ে খাবার দেখে বায়না করলেই সন্তানকে যা খুশি তাই কিনে দেবেন না।