ছবি: সংগৃহীত।
বসন্তকালে বসন্তরোগের প্রকোপ বাড়ে। কিছু দিন আগেই কেরলের প্রায় প্রতিটি ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল মাম্পস। এ বার তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে জলবসন্ত। সরকারি রিপোর্ট বলছে, বিগত ৭৫ দিনে সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। মৃতের সংখ্যা ৯। তবে, সেই রোগ কিন্তু যে কোনও সময়েই এই রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে এই ধরনের ভাইরাসবাহিত রোগের প্রকোপ প্রতি বছরই বাড়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো এটিও ভাইরাসবাহিত একটি রোগ। চিকেন পক্স বা জলবসন্তের জন্য দায়ী ভ্যারিসেলা জস্টার নামক একটি ভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই জ্বর হয়। কিন্তু সেই জ্বর সাধারণ, নাকি তা জলবসন্তের, গুটি না বেরোনো পর্যন্ত বোঝা মুশকিল।
কী ভাবে ছড়ায় জলবসন্ত?
বাড়িতে কারও জলবসন্ত হলে বা আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে তাঁর হাঁচি, কাশি, লালারস কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া বসন্তের গুটির মধ্যে যে রস থাকে সেখান থেকেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে যে কোনও বয়সের মানুষই এতে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম অর্থাৎ শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিপদ বেশি।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
করোনা অতিমারির পর হয়তো ভাইরাসের গতিবিধি সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা তৈরি হয়েছে। যে কোনও ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর বেশ কিছু দিন তার ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’ চলে। অর্থাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠার আগে নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির শরীরের ভিতরের পরিবেশের সঙ্গে ভাইরাসটিকে মানিয়ে নিতে হয়। এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম। জলবসন্তের ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার অন্তত ১০ থেকে ২০ দিন পর ধীরে ধীরে জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, খাবারে অনীহা দেখা দিতে পারে। তারও বেশ কিছু দিন পর থেকে সারা শরীরে র্যাশ বেরোতে শুরু করে। র্যাশ থেকে গুটিতে পরিণত হতে আরও কয়েকটা দিন সময় লাগে। জ্বরের সঙ্গে কারও কারও ক্ষেত্রে গলাব্যথা, নিউমোনিয়া, এনসেফালাইটিসের মতো সমস্যাও দেখা যায়।
প্রতিরোধের উপায় কী?
জলবসন্ত প্রতিরোধ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সময় মতো টিকা নিয়ে নেওয়াই ভাল। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসা, বিশেষ করে গুটি থেকে খোসা ওঠার সময়ে সতর্ক থাকা, সাধারণ পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা, সম্ভব হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং কিছু ক্ষণ অন্তর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া যেতেই পারে। বাড়ির কারও জলবসন্ত হলে তাঁকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে।