ওজন বাড়াতে গিয়ে কোনও অসুখ যেন আপনার শরীরে বাসা না বাঁধে সেই দিকটাও নজরে রাখতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন থাকাটাই সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। অতিরিক্ত ওজন যেমন ভাল নয়, স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন থাকাও ঠিক নয়। ওজন কমানোর জন্য যেখানে বহু মানুষ শরীরচর্চা করে ঘাম ঝরাচ্ছেন, তেমন অনেকেই আছেন যাঁরা ওজন বাড়াতে চাইছেন। তবে ওজন বাড়াতে গিয়ে কোনও অসুখ যেন আপনার শরীরে বাসা না বাঁধে সেই দিকটাও নজরে রাখতে হবে।
আপনার ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই) যদি ১৮.৫ এর নীচে থাকে, তা হলে মনে করা হয় আপনার ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম। বিএমআই যদি ২৫ এর বেশি হয় তা হলে আপনার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বলে মনে করা হয়। বিএমআই ৩০-এর বেশি হয়ে গেলে তা ওবেসিটির লক্ষণ বলে গণ্য করা হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম তাঁদের সময়ের আগে মৃত্যুর আশঙ্কা ওবেসিটি রয়েছে এমন মানুযের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। এ ক্ষেত্রে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাঁদের মধ্যে হাড়জনিত অসুখের প্রবণতাও বেশি। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের সমস্যাও দেখা যায়।
কী করলে ওজন বাড়বে?
ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ: দ্রুত ওজন বাড়ানোর পরিকল্পনা করলে তা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। সারা দিনে আপনি যত ক্যালরি ঝরাচ্ছেন তার তুলনায় ৩০০-৫০০ ক্যালরি বেশি গ্রহণ করতে হবে। ওজন বাড়াতে চাইলে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তা, চিনাবাদাম, খেজুর, কিসমিস, আলুবখরা, ফুলক্রিম দই, পনির, ক্রিম, মুরগির মাংস, আলু, মিষ্টি আলু, চকলেট, কলা, আ্যভোকাডো, পিনাট বাটার ইত্যাদি রাখতে পারেন।
শর্করার আধিক্য: অনেকেই শর্করা একেবারে কম গ্রহণ করেন। এটা একেবারেই ঠিক নয়। যাঁদের ওজন কম, তাঁদের অবশ্যই মোট ক্যালরির শতকরা ৫০-৬০ ভাগ শর্করা গ্রহণ করতে হবে। দিনে তিন বার প্রধান খাবার হিসেবে শর্করা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের খাবারের মধ্যে আলু, আটা, চাল, পাস্তা রাখতে পারেন।
কম ফ্যাট ও বেশি প্রোটিন: ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের তুলনায় প্রোটিন বেশি পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রোটিন আপনার পেশির ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। ফলে পেশি মজবুত হবে। কর্মদক্ষতা বাড়বে। বেশি ফ্যাট খেলে আপনার শরীরে মেদ জমবে যা স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়।
দই ও দুধ খাওয়া: ওজন বৃদ্ধির জন্য দারুণ উপকারী দই এবং কলা। অনেকেরই দুধের সঙ্গে কলা খেতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদরা সকালে দইয়ের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ওজন বাড়ানোর জন্য দুধ খুবই উপকারী। প্রতি দিন খাবারের তালিকায় অবশ্যই দুধ রাখা প্রয়োজন। এ ছাড়াও তার মধ্যে সামান্য অশ্বগন্ধা গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতি দিন খেলে তা ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
একসঙ্গে অনেকটা খাবার না খাওয়া: ওজন বাড়ানোর সময়ে একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়া উচিৎ নয়। একসঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে খাবার বেশিবার খেতে থাকুন। তাতে খাবার হজমও হবে সঠিক ভাবে।