মাথার নয়, দাঁতের মুকুট! তার যত্ন নেবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
বুড়ো বয়সে খেলতে গিয়ে দাঁতের একটি কোনা ভেঙে গিয়েছে। এমন ভাবে ভেঙেছে যে, একটু অসাবধান হলেই ঠোঁট কেটে যেতে পারে। তার চেয়েও বড় সমস্যা হল মুখ খুললেই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে সেই ভাঙা দাঁতের উঁকি মারা। দাঁতের চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যা বাচ্চাদের মধ্যে খুবই সাধারণ। জন্মের পর প্রথম যে দাঁত ওঠে, অর্থাৎ দুধের দাঁত, তা নির্দিষ্ট একটা বয়সে নিজে থেকেই পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়া দাঁত নিয়ে এত সমস্যা হয় না। মুখের ভিতর যাতে কেটে-ছড়ে না যায়, সেই জন্য ভেঙে যাওয়া দাঁতের কোনা ঘষে ‘ফাইল’ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিণত বয়সে এই ধরনের সমস্যা হলে বিপদ। সেই দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন করে দাঁত ওঠার সম্ভাবনা থাকে না। ফাইল করে সামাল দেওয়া গেলেও মুখের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। তাই এ সব ক্ষেত্রে ‘ক্রাউনিং’ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আসল দাঁত ক্ষয়ে বা কালো হয়ে গেলেও অনেকে দাঁত তুলতে চান না। তখন ওই ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের উপর আসল দাঁতের মতো দেখতে ‘ক্রাউন’ বা ‘ক্যাপ’ বসানো হয়। অনেকটা মাথার মুকুটের মতো। তবে এই পদ্ধতি বেশ জটিল এবং খরচসাপেক্ষ। দাঁতের উপর ‘মুকুট’ বসানোর পর একেবারে নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সঠিক ভাবে পরিচর্যা না করলে এই দাঁতও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
‘ক্রাউন’ দাঁতের যত্ন কী ভাবে নিতে হয়, জানেন কী?
১) ব্রাশ এবং ফ্লস করতেই হবে:
আসল দাঁতের মতোই ক্রাউন বসানো দাঁতটিরও পরিচর্যা প্রয়োজন। দিনে অন্তত পক্ষে দু’বার দাঁত মাজতেই হবে। খাবার খাওয়ার পর ফ্লসিং করাও জরুরি। এ ক্ষেত্রে দাঁতের চিকিৎসকেরা ব্রাশের দিকেও নজর দিতে বলেন। মাড়ি বা দাঁতের জন্য নরম ব্রিসল্স ব্যবহার করাই ভাল।
২) কী ধরনের মাজন ব্যবহার করবেন?
মাজনের মধ্যে যে সব রায়াসনিক থাকে, সেগুলি থেকেও দাঁতের ক্ষতি হয়। তাই মাজন কেনার সময়ে দেখে নিতে হবে, তার মধ্যে সোডিয়াম লওরেল সালফেট (এসএলএস) এবং সোডিয়াম লওরেথ সালফেট (এসএলইএস)-এর মতো উপাদান যেন না থাকে ।
৩) সজোরে কামড় দেওয়া যাবে না:
শক্ত হাড় চিবোনো কিংবা খোসা-সহ আখরোট বাদাম ভাঙা, কোনও কিছুই এই ‘ক্রাউন’ দাঁত দিয়ে করা যাবে না। অনেকেই দাঁত দিয়ে নরম পানীয়ের বোতলের ধাতব ঢাকা খোলেন। বেশি জোরে চাপ দিলে এই ধরনের দাঁত ভেঙে যেতে পারে।
৪) খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে:
দাঁতের চিকিৎসকেরা বলছেন, যে কোনও ধরনের চটচটে খাবার দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। তাই চকোলেট, চিউইংগাম, ক্যারামেল দেওয়া মিষ্টি, মার্শমেলো না খেতে পারলেই ভাল।
৫) আঘাত সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে:
দাঁতে যেন কোনও ভাবে আঘাত না লাগে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। খেলাধুলো করতে গিয়ে অসাবধানে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলে দাঁত নষ্ট হবে। অনেকে ঘুমের মধ্যে দাঁতে দাঁত ঘষেন। এই অভ্যাসেও ‘ক্রাউন’ দাঁত কিন্তু নষ্ট হতে পারে।