—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দেহের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে জিম বা যোগাসন— কোনটিই পছন্দ নয়। বদলে দু’বেলা পার্কে হাঁটাহাটি করেন। চার দেওয়ালের মধ্যে ব্যায়াম করার চেয়ে খোলা জায়গায় হাঁটাহাটি করা অনেক ভাল। হার্ট, ফুসফুস, অস্থিসন্ধি, এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল থাকে তাতে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ক্যালোরি পোড়ানোর মোক্ষম দাওয়াই হিসাবে হাঁটতে পছন্দ করেন অনেকেই। কিন্তু কত কিলোমিটার হাঁটলে কতটুকু ক্যালোরি পোড়ে সেই হিসাব জানেন?
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাঁচ জন বন্ধু গল্প করতে করতে রোজ একই গতিতে, একই রাস্তায় হাঁটেন। তা সত্ত্বেও পাঁচ জনের ক্ষেত্রে ক্যালোরি পোড়ার পরিমাণ কিন্তু আলাদা। কার শরীর থেকে কতটুকু ক্যালোরি পুড়বে তা অনেকটাই নির্ভর করে ওই ব্যক্তির ওজন, হাঁটার গতি এবং কী ধরনের রাস্তায় হাঁটছেন তার উপর।
ধরা যাক, কোনও ব্যক্তির ওজন ৭০ কেজি। এক কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে ওই ব্যক্তির যে পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হবে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি পুড়বে ৯০ কেজি ওজনের কোনও ব্যক্তির। প্রাথমিক ভাবে বলা যায়, ৭০ কেজি ওজনের কোনও ব্যক্তি ১ কিলোমিটার পথ হাঁটলে ৬০ থেকে ৭৫ ক্যালোরি এবং ৯০ কেজি ওজনের কোনও ব্যক্তি হাঁটলে ৮০ থেকে ১০০ ক্যালোরি পোড়ে।
এ বার আসা যাক গতির প্রসঙ্গে। প্রতি ঘণ্টায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে পারলে যে পরিমাণ ক্যালোরি ক্ষয় হবে, তার চেয়ে অনেক কম শক্তি ক্ষয় হবে প্রতি ঘণ্টায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার পথ হাঁটলে। যদি খাড়াই কিংবা পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটেন। সে প্রসঙ্গ আলাদা। হাঁটার গতির সঙ্গে হার্ট রেট বা হৃৎস্পন্দনের সম্পর্ক আছে। হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি পেলে ক্যালোরিও পুড়বে তাড়াতাড়ি।
সমতল জায়গায় হাঁটলে যতটুকু ক্যালোরি পুড়বে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি পুড়বে পাহাড়ি বা খাড়াই রাস্তায় হাঁটলে। সে ক্ষেত্রে হাঁটার গতি কম হলেও ক্ষতি নেই।
এখানে আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিপাকহার এবং বয়স। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বিপাকহারের গতি ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসে। তাই হাঁটার পাশাপাশি বিপাকহার বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
কী করলে দ্রুত ক্যালোরি পুড়বে?
১) সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা হল জোরে জোরে হাঁটা। দ্রুত গতিতে হাঁটলে হার্ট রেট অর্থাৎ হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায়। যা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।
২) ক্যালোরি পোড়াতে হলে শুধু দ্রুত গতিতে হাঁটলেই হবে না। সঙ্গে জগিংও করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর হাঁটা এবং জগিং করা— এই ছন্দ মেনে চলতে পারলে ক্যালোরি পোড়ানো সহজ হবে।
৩) হাঁটার সঙ্গে হালকা ওজন বইতে পারলে আরও ভাল হয়। ভার বহন করার সময়ে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। ক্যালোরি পুড়লে তবেই শক্তি পাওয়া যায়।
৪) সমতল রাস্তায় না হেঁটে একটু খাড়াই, পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটলে উপকার পাবেন। চড়াই-উতরাই পথে হাঁটতে গেলেও বেশি শক্তি ক্ষয় হয়। তাতেই অনেকটা পরিমাণে ক্যালোরি পোড়ে।
৫) একটু একটু করে হাঁটার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। এক কিলোমিটার থেকে শুরু করে ক্রমে দশ বা পনেরো কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত করতে পারলে ক্যালোরি পোড়ার পরিমাণও বাড়বে।