জলশূন্যতার লক্ষণ কী ভাবে ফুটে ওঠে নখে? ছবি: ফ্রিপিক।
জল খুব কম খান? শরীরে জলের ঘাটতি হলে তা কিন্তু নখ দেখেই বোঝা যায়। চিকিৎসকেরা বলেন, নখ দেখে বেশ কিছু রোগের পূর্বলক্ষণ টের পাওয়া যায়। নখ যদি ভঙ্গুর হয়ে যায়, রং ফ্যাকাশে হয়, নখের চারপাশে ফোলা ভাব দেখা দেয় এবং নখের উপরে সাদা বা বাদামি ছোপ ফুটে ওঠে, তা হলে বুঝতে হবে শরীর মোটেই ভাল নেই। পুষ্টির ঘাটতি তো হচ্ছেই, পাশাপাশি জলশূন্যতার সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের একটি গবেষণাপত্রে এই বিষয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, শরীরে জলের ঘাটতি হলে নখ খুব তাড়াতাড়ি ভাঙতে থাকবে। নখের উপর সাদা ছোপ ফুটে উঠবে। এর কারণ হল, নখ তৈরি হয় ত্বকের কোষ থেকে, যাতে কেরাটিন ও জল থাকে। নখের কিন্তু ১৮ শতাংশই হল জল। যা নখকে আর্দ্র রাখে। নখের উপরের মসৃণ ভাবের কারণই হল জল। আর কেরাটিন হল প্রোটিন যা নখের আকার ও গঠন তৈরি করে। যদি শরীরে জলের ভারসাম্য বিগড়ে যায়, তা হলে স্বাভাবিক ভাবে নখের আকার ও রঙে তার প্রভাব পড়বে।
১০২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ। দেখা গিয়েছিল, যাঁরা জল কম খান বা জলশূন্যতার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের নখ বাকিদের থেকে দ্রুত ভাঙছে ও নখের চারপাশে কালচে ছোপ ফুটে উঠছে। নখের চারপাশের চামড়া দ্রুত কুঁচকে যেতেও দেখা গিয়েছে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, কেবল জল কম খাওয়া নয়, অতিরিক্ত মদ্যপান করা, বারে বারে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা অথবা বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কারণেও নখ ভেঙে যেতে পারে। একে বলে ‘নেল ডিহাইড্রেশন’, অর্থাৎ নখের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যাওয়া। হাজার পরিচর্যা বা ম্যানিকিয়োরেও তা ঠিকমতো সারে না । এর একমাত্র প্রতিকারের উপায় হল, পর্যাপ্ত জল পান করা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। পরিমাণ মতো জল খেলে নখের আর্দ্রতা স্বাভাবিক ভাবেই ফিরে আসবে আর নখ ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যাও দূর হবে।