মহিলাদের কমবয়সে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ছে কেন? ছবি: ফ্রিপিক।
একটা সময় ছিল, যখন ধারণা করা হত হার্ট অ্যাটাক মূলত পুরুষদের এবং বয়স্কদের অসুখ। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই ধারণা অনেক বদলে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ইদানীং হার্ট অ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের একটা বড় অংশই কমবয়সি ও মহিলা। জিনগত কারণে বা জন্মগতভাবেও পুরুষ ও মহিলাদের হার্টের রোগ থাকতে পারে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আচমকাই হৃদ্রোগ হানা দিচ্ছে। অত্যধিক মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ত জীবন, সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া— দৈনন্দিন যাপনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে হৃদ্রোগের কারণ।
চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানাচ্ছেন, এই হার্ট অ্যাটাকের অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে অন্যতম বড় কারণ হল ডায়াবিটিস। ৫৫ বছরের কমবয়সি মহিলাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আর এই ডায়াবিটিসই চুপিসাড়ে ডেকে আনছে হার্টের রোগ।
‘জামা কার্ডিয়োলজি’ নামে একটি মেডিক্যাল জার্নালে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। সেখানে গবেষকেরা দাবি করেছিলেন, টাইপ ২ ডায়াবিটিস করোনারি ডিজ়িজ়ের ঝুঁকি প্রায় ১০ গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক দিলীপ কুমারের মত, টাইপ ২ ডায়াবিটিস যাঁদের আছে, তাঁদের শরীরে ‘লাইপোপ্রোটিন ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স’ বেড়ে যায়। যে কারণে প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। ডায়াবিটিসের কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ে। এই খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কোলেস্টেরল হার্টের রোগের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
কোন কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন মেয়েরা?
মহিলাদের ক্ষেত্রে হার্টের অসুখের উপসর্গগুলি হল— হঠাৎ ক্লান্ত বোধ করা, ঘুমে ব্যাঘাত, নিঃশ্বাসের সমস্যা, হজমের গোলমাল এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
এ রকম কিছু লক্ষ্য করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এর পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ, পরিমিত আহার (কম ফ্যাট এবং মাপমতো কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া), এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং যে কোনও রকম ঠান্ডা পানীয় কম খেতে হবে। টানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমও জরুরি।