Monsoon Precaution

প্রাক্-বর্ষাতেই যদি পেটখারাপ কিংবা জ্বর-সর্দি চেপে ধরে, কী করবেন? কী বলছেন চিকিৎসক? 

যত সাবধানেই থাকুন না কেন, বর্ষাকালে একটু-আধটু পেট খারাপ, সর্দি-কাশি হবেই। তবে এই ধরনের উপসর্গ জল কিংবা ব্যাক্টেরিয়াবাহিত রোগে আক্রান্ত হলেও দেখা দিতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ০৯:৩৩
Graphical Representation

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আমজনতার কাছে বর্ষাকাল মানে খিচুড়ি আর ইলিশ! তা ছাড়া আর কোনও কারণ নেই এই ঋতুর প্রতি দরদ দেখানোর। গরম থেকে সাময়িক স্বস্তি মিললেও রাস্তার জমা জল, প্যাচপেচে কাদার অস্বস্তি নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে কেউই বিশেষ ভালবাসেন না। তার উপর এই সময়ে নানা ধরনের রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মতো রোগ এই সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সঙ্গে সাধারণ পেট খারাপ, অ্যালার্জিজনিত সর্দি-কাশি তো আছেই। এই ধরনের সমস্যা এড়াতে কী কী সতর্কতা নেওয়া জরুরি? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।

Advertisement

বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। অনেক জায়াগাতেই জল জমে পুকুরঘাট, নদীনালার জলস্তর এক হয়ে যায়। অনেক জায়গায় খাওয়ার জলের পাইপের মধ্যে রাস্তার নোংরা জমা জল মিশে একাকার হয়ে যায়। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “এ ক্ষেত্রে সেই আবার পুরনো পন্থায় ফিরে যাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ। অর্থাৎ, জল ফুটিয়ে খাওয়া। জল ফুটিয়ে নিলে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই ডায়েরিয়া বা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রান্ত সমস্যা এড়িয়ে চলতে পারবেন। বাইরে বেরোলে অবশ্যই জল কিনে খেতে হবে।” জ্বর কিংবা পেটের কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খেলেও কিন্তু বিপদে পড়তে পারেন। পেটের রোগ থেকে বাঁচতে খাবারের বিষয়েও সচেতন থাকা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। এই সময়ে অতিরিক্ত তেলমশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল। বাইরের খাবার খেলেও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসক।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ফলমূল, শাকসব্জি খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। বর্ষাকালে আবার এই ফলমূল বা শাকসব্জিই কিন্তু রোগজীবাণুর আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়? গবেষক এবং পুষ্টিবিদ উদয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া কাটা ফল একেবারেই খাওয়া যাবে না। জলে জন্মায় এমন শাক বা সব্জি এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল। সম্ভব হলে এক চিমটে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে শাকসব্জি ভিজিয়ে রাখতে পারেন। কিছু ক্ষণ পর আবার পরিষ্কার জলে ধুয়ে, ভাল করে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।”

বর্ষার জমা জল মশার আঁতুড়ঘর। এ কথা তো সকলেই জানেন। রাস্তার খানাখন্দে জমা জল সহজে যেতে চায় না। আবার, বাড়ির আশপাশে জল জমার জায়গা থাকলে সেখানেও মশারা বংশবিস্তার করে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া বা চিকনগুনিয়ার মতো রোগের বাড়বাড়ন্ত দেখা দেয় এই সময়ে। অরিন্দমের কথায়, “মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার করতেই হবে। রাসায়নিক স্প্রে বা ধূপ ব্যবহার করার পরামর্শ আমরা দিই না। কারণ, অনেকেরই এতে শ্বাসকষ্ট হয়। তার চেয়ে বরং মশা তাড়ানোর তেল বা ক্রিম ব্যবহার করা ভাল।”

এ ছাড়া, বর্ষায় জল গায়ে লাগলে জ্বর-সর্দি, ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যা তো খুব সাধারণ। অনেকেরই বৃষ্টির জল গায়ে পড়লে ত্বকে অ্যালার্জি হয়। তার থেকে বাঁচার উপায় লম্বাহাতা জামা কিংবা ট্রাউজ়ার্স পরা। তবে, ভিজে পোশাক বা অন্তর্বাস পরেও ঠান্ডা লাগতে পারে। হতে পারে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ। সে বিষয়েও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement