শরীরচর্চায় মন দিলেও সারা ক্ষণ খাই খাই ভাব তাড়া করছে মনের ভিতর। ছবি: সংগৃহীত।
বছরের আর পাঁচটা সময় ওজন নিয়ে তেমন মাথা না ঘামলেও পুজোর আগে অনেকেই চান ছিপছিপে শরীর পেতে। জিমের মেম্বারশিপ ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছেন কেউ কেউ। শরীরচর্চায় মন দিলেও সারা ক্ষণ খাই খাই ভাব তাড়া করছে মনের ভিতর। সন্ধেবেলা হালকা খিদে পেলেই ফোনের দিকে চলে যায় চোখ। কোন রেস্তরাঁয় কোন অফার চলছে, সেই অনুযায়ী চলে অর্ডার! মোমো, রোল-চাউমন, পিৎজ়া, বার্গার— এক এক দিন এক এক রকম ফরমায়েশ। ফলে ওজন ঝরানোর সব চেষ্টাই বৃথা। ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলি আমরা। কমে যায় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। বৃদ্ধি পায় বিপদ।
পুষ্টিবিদদের মতে, রোজের ডায়েটে মোট ক্যালোরির ২৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এলে ভুলভাল খাওয়ার প্রবণতা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়। কাজেই দিনের প্রতিটি খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিন যেন থাকে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। খুব খিদে পেলে ভাজা বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের আসক্তি বেড়ে যায়। খিদে চেপে রাখা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। অল্প খিদে পেলেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিলে ভুলভাল খাওয়ার প্রতি আসক্তি কমে।
ওজন ঝরাতে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আসক্তি কমাবেন কী ভাবে?
১) মুখে চিউয়িং গাম রাখলে মিষ্টি এবং নোনতা খাবারের আসক্তি কিছুটা কমে। তবে তা যেন সুগার-ফ্রি হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
২) শরীরে জলের ঘাটতি হলেও খাই খাই ভাব বেড়ে যায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিনে কম করে আড়াই-তিন লিটার জল খেতে হবে। অল্প করে, বারে বারে জলে চুমুক দিতে থাকুন। এ ক্ষেত্রে ডিটক্স ওয়াটারের উপর ভরসা রাখতে পারেন।
৩) ঘুম কম হলে ভাজা বা মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়তে পারে। কাজেই ভাল করে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। কখনও যদি কম ঘুমের ক্লান্তি গ্রাস করে, চিনি ছাড়া কালো চা বা কফি খান দু–এক কাপ।
৪) মানসিক চাপ বাড়লে গ্লুকোজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হয়। তবে তার স্থায়িত্ব থাকে ৩–৫ মিনিট। সে সময় আড্ডায়-কাজে কাটিয়ে দিতে পারলে বিপদ কমে যায়।
৫) হালকা খিদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার সব সময় হাতের কাছে রাখুন। চিপ্সের বদলে খান স্বাস্থ্যকর কাজু, চিনেবাদাম বা আখরোট। তাতে মন না ভরলে অল্প করে পপকর্ন বা মাখানা খেতে পারেন। চকোলেট আসক্তি মাত্রা ছাড়ালে মিল্ক চকোলেটের বদলে খান ডার্ক চকলেট। ওজন ঝরানোর প্রক্রিয়ায় মাঝেমধ্যে আমাদের আইসক্রিম, পেস্ট্রির মতো মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হয়, তার বদলে কিসমিস বা খেজুর রাখুন হাতের কাছে।