ডিমেনশিয়া নয়, ভুলে যাওয়ার পিছনে থাকতে পারে অন্য আর এক কারণ। ছবি: সংগৃহীত।
শরীর চাঙ্গা রাখতে কিন্তু ভিটামিন ভূমিকা অনেকখানি। ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ-এর বিষয় আমরা অল্প বিস্তর সতর্ক হলেও ভিটামিন বি১২ সম্পর্কে অনেকেরই কোনও ধারণা নেই। অথচ দেহের জন্য অপরিহার্য উপাদানগুলির মধ্যে এই ভিটমিনটি অন্যতম। রক্তের গঠন ও স্নায়ুতন্ত্র সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য এই ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মানবদেহ এই ভিটামিন সরাসরি উৎপাদন করতে পারে না। এর জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় যথাযথ খাবার ও ফুড সাপ্লিমেন্টের উপর। বিশেষ করে নিরামিশাষীদের মধ্যেই এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায়, কারণ এটি ‘প্লান্ট বেসড ভিটামিন’ নয়। শরীরে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি তৈরি হলে অ্যানিমিয়া, ডায়ারিয়া, পেপটিক আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা হতে পারে। জেনে নিন কোন কোন কাজে লাগে এই ভিটামিন?
১) রক্তকণিকা ও কোষ তৈরিতে সাহায্য করে, অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি কমায়।
২) ডিএনএ ও জিনগত উপাদান তৈরিতে সাহায্য করে।
৩) হাড় ভাল রাখতে সাহায্য করে, অস্টিওপোরেসিসের ঝুঁকি কমায়।
৪) চুল, নখ ও ত্বক ভাল রাখে।
৫) মানসিক অবসাদ কমাতেও এই ভিটমিনের ভূমিকা রয়েছে।
এই ভিটমিনের অভাবে শরীরে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। জেনে নিন সেগুলি কী কী?
১) ভিটামিন বি১২ শরীরে স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে পায়ে ঝিঁঝি ধরার মতো সমস্যা হয়। এ ছাড়া, দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে অনেকের পা অসাড় হয়ে যায়, এটিও কিন্তু শরীরে বি১২ ভিটামিনের ঘাটতির লক্ষণ।
২) শরীরে ক্লান্তিভাব, যে কোনও কাজ করার প্রতি অনীহাও এই ভিটামিনের অভাবের কারণেও হতে পারে। এই ভিটামিনের ঘাটতির কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। অকালেই সব ভুলে যাচ্ছেন? কিছুই মনে থাকছে না? তাহলে সতর্ক হোন।
৩) এ ছাড়া নিশ্বাস নিতে অসুবিধা, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, হৃদ্স্পন্দন বেড়ে যাওয়াও কিন্তু শরীরে ভিটামিন বি১২-এর অভাবের লক্ষণ।
৪) শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি হলে শরীর ত্বক প্রাথমিক ভাবে বিবর্ণ দেখায়। জন্ডিস কিংবা অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৫) মুখে ঘন ঘন আলসার হলেও সতর্ক হোন। এটিও কিন্তু শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে।
নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কিছুটা কম থাকে। প্রাণিজ খাবারে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে ভিটামিন বি১২ থাকে। ডিম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার ভিটামিন বি১২-এর সমৃদ্ধ উৎস। প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে রেড মিট, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, দুধ, দই, ছানা ও ডিমে ভাল মাত্রায় এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।