বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ছবি: সংগৃহীত
ব্যথা-বেদনা হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়াই মুড়ি-মুড়কির মতো ‘পেন কিলার’ কিনে খেয়ে নেন অনেকেই। কিন্তু এ ভাবে মর্জি মতো ওষুধ ক্রমাগত খেতে থাকলে শরীরে নানা রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তার বদলে উপায় থাকলে ব্যথা উপশমের জন্য নানা প্রাকৃতিক উপাদান বা পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। বহুদিন ধরেই বহু মানুষ ব্যথা বেদনা উপশমে অপরিহার্য তেল, নানা ভেষজ উপাদান এবং বিকল্প থেরাপি ব্যবহার করে আসছেন।
১। রোজমেরি তেল
কিছু গবেষকের মতে, রোজমেরি তেল মাথাব্যথা, পেশী ও হাড়ের ব্যথা এবং খিঁচুনি নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি, এটি প্রদাহ কমাতে পারে। মসৃণ পেশী শিথিল করতে পারে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে। সরাসরি ব্যবহার না করে অলিভ অয়েলের মতো অন্য কোনও তেলে মিশিয়ে পাতলা করে ব্যবহার করতে হয় এটি। এক আউন্স সাধারণ তেলে তিন থেকে পাঁচ ফোঁটা রোজমেরি তেল যোগ করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মস্তিষ্কের অপিওয়েড রিসেপ্টর নামক রিসেপ্টরগুলিতে কাজ করে, যা ব্যথার সংবেদনের সাথে জড়িত।
২। ক্যাপসাইসিন
প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমের পদ্ধতি হিসেবে অনেকে মরিচের মধ্যে উপস্থিত ক্যাপসাইসিনও ব্যবহার করেন। এই পদার্থটি ত্বকের উপর প্রয়োগ করা হলে একটি হাল্কা জ্বলন বা ঝাঁঝালো সংবেদন সৃষ্টি করতে পারে। অনেক ব্যথা উপশমকারী পণ্যেও ক্যাপসাইসিন থাকে। গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন কেন এটি ব্যথা উপশম করে, তবে কারও কারও মতে এটিও স্নায়ুর উপর কাজ করে ব্যথার অনুভূতি হ্রাস করে।
৩। আদা
২০১৫ সালের একটি গবেষণা বলছে, শরীরচর্চা এবং দৌড়ানোর ফলে মাংসপেশির যে ব্যথা হয়, ৫ দিন এক টানা ২ গ্রাম করে আদা খেলে সেই ব্যথা হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আদা রোগমুক্তি ত্বরান্বিত করতে পারে এবং ব্যায়াম সম্পর্কিত প্রদাহ কমাতে পারে।
৪। হলুদ
হলুদের মধ্যে কারকিউমা নামক একটি উপাদান থাকে, যা ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বিশেষত হাঁটুর অস্টিওআর্থারাইটিসের চিকিত্সায় এটি অত্যন্ত কার্যকর। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রতেও ব্যথানাশক হিসেবে হলুদের প্রচলন রয়েছে। প্রদাহ কমানোর জন্যেও অত্যন্ত কার্যকর হলুদ।
৫। যোগচর্চা
যোগ অনুশীলন প্রাকৃতিক ভাবে ব্যথা নিয়ন্ত্রণের অত্যন্ত উপযোগী একটি পন্থা। বিশেষত কোমর ও পিঠের ব্যথা নিরময়ে যোগ খুবই উপযোগী। যোগ মানসিক চাপ কমাতেও সহায়তা করে, ফলে উদ্বেগ ও মানসিক চাপ সংক্রান্ত ঘাড় ও মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতেও বেশ কার্যকরী এটি। নিয়মিত যোগচর্চায় শরীরের বিভিন্ন পেশী সতেজ থাকে ফলে পেশীর টান ও ব্যথা কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
তবে মনে রাখবেন সকলের শরীর সমান নয়। এক নয় ব্যথার কারণ ও তীব্রতাও। কাজেই ব্যথা কমাতে কোন পদ্ধতি সবচেয়ে ভাল কাজ করে তা ব্যাক্তিভেদে আলাদা। তাই ব্যথা বেদনা হলে সর্ব প্রথম নিতে হবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ।