ওজন কমাতে চাইছেন? ছবি: সংগৃহীত।
কর্মব্যস্ত জীবনে সময় বার করে রোজ জিমে যাচ্ছেন, ঘামও ঝরাচ্ছেন অথচ ওজন যে কে সেই! একটানা পরিশ্রম করেও মনে মতো ফল না পেলে শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। আপনি ভাবছেন ঠিক মতো সব মেনেই শরীরচর্চা করছেন, তা হলে এমন হচ্ছে কেন! আপনি হয়তো জানেনই না আপনার শরীরচর্চাতেই গলদ থেকে যাচ্ছে, যার জন্য ওজন কমছে না। রোজের জীবনে অজান্তে এমন কিছু ভুল হয়ে যায় যার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করেও কোনও লাভ হয় না! জিমে গিয়ে ভাল ফল পাওয়ার জন্য মন দিয়ে শরীরচর্চা করার পাশাপাশি আর কোন কোন নিয়ম মেনে চলবেন?
১) রোজ রোজ ওজন মাপবেন না:
ওজন দেখার মেশিনে ওজন কমছে না দেখেই অনেকে হাল ছেড়ে দেন। আমাদের শরীরে এক দিনে ১-২ কিলো ওজন এ দিক-ও দিক হয়। এটা নির্ভর করে কতটা খাবার খেলাম এবং তরল পদার্থ খেলাম তার উপরে। তাই সব সময় ওজন দেখার মেশিনে না দেখে, খেয়াল রাখুন যে জামাটা আপনি পরতেন, সেটা ঢিলে হল কি না। কিংবা আপনার নিজের শরীরটা আগের চেয়ে অনেক হালকা লাগছে কি না। রোজ রোজ ওজন পরিমাপ করবেন না। প্রতি সপ্তাহে ওজন মাপলেই যথেষ্ট।
২) খালি পেটে শরীরচর্চা নয়:
কিছুই না খেয়ে কিংবা কম খেয়ে শরীরচর্চা করা আর একটি ভুল কাজ। ঠিক মতো খাবার খেয়ে শরীরচর্চা করুন, তাতে শক্তিও পাবেন। শরীরচর্চা করলে কিন্তু ডায়েটের উপর জোর না দিলে মুশকিলে পড়বেন। কার্বোহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের ভারসাম্য বজায় রাখা ভীষণ জরুরি। শুধু শরীরচর্চা আগেই নয়, সারা দিনে খুব বেশি ক্ষণ কখনও খালিপেটে থাকবেন না। এতেও কিন্তু ওজন বেড়ে যায়। অল্প পরিমাণ খাবার বারে বারে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩) অতিরিক্ত প্রোটিন খাবেন না:
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে পেশির শক্তি ও শারীরিক শক্তি ফেরানোর জন্য প্রোটিন খাওয়া দরকার। পুষ্টিবিদরাও ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে প্রোটিনের উপরে বেশি জোর দেন। তবে প্রোটিনও খেতে হবে পরিমাণ মতো। অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন খেয়ে ফেললে ওজন কমানোয় সমস্যা হবেই। ওজন ঝরানোর পরিকল্পনা থাকলে দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১.২ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত প্রোটিন দেহে চর্বি হিসাবে জমে যায়, যার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
৪) ধারাবাহিকতার অভাব:
সপ্তাহের তিন দিন জিমে গিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করে নিলেন আর বাকি দিনগুলি ঘরে বসেই কাটিয়ে দিলেন, এমনটা করলে কিন্তু চলবে না। ওজন ঝরাতে হলে শরীরচর্চার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। প্রতিদিন যে শরীরচর্চাটাই করবেন, সেটা ৩০-৪০ মিনিট টানা করা উচিত। কোনও দিন কম, কোনও দিন বেশি করলে ফল পাওয়া যায় না।
৫) শুধু কার্ডিয়ো করা:
কার্ডিয়োতে অনেক বেশি ক্যালোরি ঝরে, এটা ঠিকই। কিন্তু অনেকটা ওজন কমাতে গেলে কেবল কার্ডিয়োর উপর ভরসা রাখলে চলবে না। প্লাঙ্ক, জাম্পিং জ্যাক, স্কোয়াটের মতো ব্যায়াম কার্ডিয়োর মধ্যে পড়ে। হাঁটাহাঁটি করা, সাঁতার কাটা, জগিং, সাইকেল চালানোও কিন্তু কার্ডিয়োর মধ্যেই পড়ে। তাই সব ধরনের শরীরচর্চা মিলিয়ে-মিশিয়ে করার চেষ্টা করুন। ওয়েট লিফটিংও খুব উপকারী। তবে আপনার শরীরের জন্য কোন ব্যায়াম সবচেয়ে উপকারী তা কেবল আপনার ট্রেনারই বলতে পারেন। তাই কত ক্ষণ শরীরচর্চা করবেন আর কী কী শরীরচর্চা করবেন তা ভাল করে জেনে নেওয়াই শ্রেয়।