‘খিলাড়ি’র ফিটনেস মন্ত্র কী? ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডের অভিনেতাদের মধ্যে ফিটনেস নিয়ে সবচেয়ে সচেতন যদি কেউ থাকেন, তা হলে তিনি হলেন ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমার। তিনি নিজে যেমন ফিট, তেমনই তাঁর অনুরাগীদেরও ফিট থাকার পরামর্শ দেন সর্ব ক্ষণ। অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘এখন অনেকেই সিক্স প্যাক ও এইট প্যাক তৈরি করতে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন। এই সব ‘শর্টকাট’ পন্থা নিলে আপনার শরীর বাইরে থেকে ফোলা দেখালেও ভিতর থেকে কিন্তু একেবারে ফাঁপা হয়ে যাবে। চটজলদি ওজন ঝরাতে গিয়ে আস্বাস্থ্যকর পন্থাগুলি অনুসরণ করলে আপনার আয়ু কমে যাবে। যেমন আমি মনে করি, পরিমিত মাত্রায় খাঁটি ঘি খাওয়া কিন্তু স্বাস্থ্যকর। তবে তরুণ-তরুণীরা মনে করেন, ঘি খেলেই মোটা হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমাদের ফিটনেসের জন্য কী ভাল আর কোনটা খারাপ, সে বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকা কিন্তু ভীষণ জরুরি।’’ ফিট থাকতে কী পরামর্শ দিলেন অভিনেতা? অক্ষয় বললেন, ‘‘দু’মিনিটের নুড্লসের মতো শর্টকাট নিলে চলবে না। নতুন বছরে ফিট থাকতে হলে জীবন থেকে রাসায়নিক সামগ্রী দূর করুন, নিয়ম করে শরীরচর্চা, যোগাসন করুন। সময় মতো ঘুমোনো, সময় মতো ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।’’
কোন মন্ত্রে ফিট থাকেন ৫৭ বছর বয়সি অক্ষয়?
নিয়মানুবর্তিতা: শুটিং থাকুক কিংবা না-ই থাকুক, ফিটনেস নিয়ে কোনও রকম আপস করেন না অক্ষয়। এমন দিন হয় যে দিন শরীরচর্চা করতে ইচ্ছে করে না, জিমে যাওয়ার নাম শুনলেই যেন জ্বর আসে— অক্ষয় কিন্তু ফিটনেসের বিষয় নিয়মানুবর্তিতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেন সব সময়ে। বলিউডের কোনও পার্টিতে তেমন ভাবে অক্ষয়কে দেখা যায় না। রাত জেগে পার্টি করলে সকালে উঠে ব্যায়াম হবে না, তাই পার্টি থেকে দূরেই থাকেন ‘খিলাড়ি’।
পর্যাপ্ত ঘুম: ফিট থাকতে আরও একটা বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অক্ষয়ের কাছে, তা হল পর্যাপ্ত ঘুম। সময় পেলেই তাই চোখের পাতা বুজে ফেলেন অক্ষয়। এমন বহু বার হয়েছে, পর পর কয়েকটি রাত না ঘুমিয়েই কেটেছে। কিন্তু তার পরের কয়েক দিন বিরতি নিয়ে বাড়িতেই ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। রোজ রাতে ৯টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন অক্ষয়। সকালে ওঠেন ৫:৩০টার সময়।
সুষম ডায়েট: শুধু শরীরচর্চা করলেই ফিট হওয়া সম্ভব নয়। তার জন্য খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবারও। খাওয়াদাওয়া নিয়ে বেশ সচেতন অক্ষয়। তাঁর খাবারে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিনের সঠিক ভারসাম্য থাকে। ঘড়ি ধরে খাবার খান। বাইরের খাবারের সঙ্গে একেবারেই কোনও সম্পর্ক নেই। শুটিংয়ে গেলেও সঙ্গে নিয়ে যান বাড়ির খাবার। তাঁর ডায়েটে প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাভুজির কোনও স্থান নেই। সকাল ৮টার মধ্যে জলখাবার খেয়ে নেন। রাতে ৭টায় নৈশভোজ সারেন অক্ষয়।
বয়স সংখ্যা মাত্র: বয়স বাড়লেই যে ফিটনেস নিয়ে ভাবা যায় না, এমনটা মনে করেন না ষাট ছুঁই ছুঁই অক্ষয়। বড় পর্দায় অক্ষয়ের বয়স বোঝার জো নেই। অ্যাকশন দৃশ্যে অর্ধেক বয়সি নায়কদেরও টেক্কা দিচ্ছেন তিনি। অক্ষয় মনে করেন বয়স ২০ হোক কিংবা ৫০, ফিটনেস নিয়ে যে কোনও বয়সেই সচেতন হওয়া যায়। অল্প দিয়েই শুরু হোক। দিনে ১০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলেও কিন্তু শেষমেশ শরীরের লাভ হবে।
শরীরচর্চা: শত ব্যস্ততাতেও শরীরচর্চার সঙ্গে কোনও আপস করেন না অক্ষয়। প্রতি দিনই প্রায় শুটিং থাকে অক্ষয়ের। শুটিং সেটেই কেটে যায় দিনের বেশির ভাগ সময়। তা সত্ত্বেও শরীরচর্চা করতে ভোলেন না তিনি। খুব ভোরে কলটাইম থাকলে রাতে বাড়ি ফিরে শরীরচর্চা করেন। আবার বেলার দিকে কল থাকলে সকালে উঠে প্রথম শরীরচর্চা সেরে নেন তিনি। শুটিংয়ের জন্য বিদেশে গেলেও এই নিয়মের অন্যথা হয় না।