যোগাসনের ফল পেতে তা করুন নিয়ম মেনে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রতি দিন খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, শরীরচর্চায় অনীহা— এই সব কারণে শরীরে বাসা বাঁধছে একাধিক রোগবালাই। যত দিন যাচ্ছে, ততই দীর্ঘতর হচ্ছে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম-সারণি। এত রকম ওষুধ খাওয়ার পরেও নিস্তার নেই। কখনও পায়ে ব্যথা, কখনও হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, কখনও আবার মাথার যন্ত্রণা— রোজ কিছু না কিছু লেগেই রয়েছে। তবে কি বয়সের ভারের প্রকোপ থেকে বেরিয়ে এসে মোটের উপর সুস্থ থাকা আজকাল আর সম্ভব নয়? না। নিয়মিত যোগাভ্যাস করলে সুস্থ থাকা সম্ভব। বয়সের ছাপ শরীর ও মন থেকে মুছে ফেলতে যোগাসন ও প্রাণায়ামের জুড়ি নেই। তবে যোগাসন করতে হবে নিয়ম ও মুদ্রা মেনে, তবেই পাবেন সুফল।
যোগাসনের সময় কোন ভুলগুলি এড়িয়ে চলবেন?
১) যোগাভ্যাস করার প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক আগে কিছু খাবেন না। খাবার সঠিক ভাবে হজম হলে তবেই যোগাসন করুন। নইলে অল্পতেই ক্লান্তি ভাব আসবে।
২) যোগাভ্যাসের সময় সম্পূর্ণ মনোযোগ আসন আর প্রাণায়ামের উপরেই দিতে হবে। যোগাসন করতে করতে মোবাইল, টিভি কিংবা অন্য কোনও গ্যাজেট ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। মন একেবারে শান্ত করে যোগাসন করা জরুরি। বড়জোর কোনও মৃদু সুর বাজাতে পারেন।
৩) তাড়াহুড়োর মধ্যে যোগচর্চা না করাই ভাল। ক্লান্ত বোধ করলে কিংবা সারা দিনের কঠোর পরিশ্রম করে যোগাসন না করারই পরামর্শ দেন শরীরচর্চাবিদেরা। দিনের শুরুতে যোগাভ্যাস করলে সবচেয়ে ভাল। শেষের দিকে একমনে প্রাণায়াম করতে ভুলবেন না। শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতি যেন সঠিক থাকে সে বিষয় সতর্ক থাকুন। সব শেষে শবাসন অবশ্যই করতে হবে।
৪) শরীরে কোনও চোট-আঘাত পেলে, কোনও জটিল আসন করার আগে অবশ্যই চিকিৎসক কিংবা শরীরচর্চাবিদের পরামর্শ নিয়ে করবেন। নইলে কিন্তু হিতে-বিপরীত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পোশাকের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। যোগাসনের সময় খুব বেশি আঁটসাট পোশাক না পরাই শ্রেয়। ‘যোগা ম্যাট’ ছাড়া আসন করবেন না। যোগাসনের ক্ষেত্রে আসনের ভঙ্গিটি ঠিক হওয়া ভীষণ জরুরি। তাই সমাজমাধ্যম দেখে যোগাসন না করে, প্রশিক্ষকের কাছে প্রথম পাঠটা নেওয়া ভীষণ জরুরি।
৫) যোগাসন করেই অনেকে স্নান করে ফেলেন। এই ভুল কখনওই করবেন না। যোগাসনের পর ৩০ মিনিট স্নান করবেন না। এই সময়ের মধ্যেও কিছু খাবার কিংবা পানীয় না খাওয়াই ভাল।
হাল ছাড়লে চলবে না: অন্যান্য শরীরচর্চার মতো, এক সপ্তাহ যোগাসন করলেই যে আপনার ওজন ঝরে যাবে, এমনটা নয়। যোগাসন আসলে পুরোটাই অভ্যাসের ব্যাপার। রোজ নিয়ম করে করলে তবেই ফল পাবেন। চটজলদি ফলের প্রত্যাশা এ ক্ষেত্রে না করাই ভাল!