মশলাই সারাবে অসুখ। ছবি: সংগৃহীত।
বিরিয়ানির মশলাতে জায়ফল না দিলেই নয়। লখনউ ঘরানার নানা রকম লোভনীয় পদ রয়েছে, যেখানে এই মশলা ব্যবহারের চল বেশি। অনেকটা সুপুরির মতো দেখতে জায়ফল আসলে এক ধরনের বাদাম। এই জায়ফলের জন্ম কিন্তু ইন্দোনেশিয়ায়। যার ফুল হচ্ছে জয়িত্রী। খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ বাড়িয়ে তুলতে জায়ফলের ভূমিকা রয়েছে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু তার স্বাদ কিংবা সুগন্ধের জন্য নয়, আয়ুর্বেদে জায়ফল জনপ্রিয় তার ঔষধি গুণের জন্য। ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে জায়ফলের গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়মিত খেলে কোন কোন রোগ বশে রাখা যেতে পারে?
১) হজমে সহায়ক
অনেকেই মনে করেন, জায়ফল হজমশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে জায়ফল গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে খাবার হজমে সহায়ক উৎসেচক ক্ষরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, গ্যাস, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও বশে থাকে।
২) রোগ প্রতিরোধ শক্তি উন্নত করে
জায়ফল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। এ ছাড়া জায়ফলের মধ্যে রয়েছে বিশেষ এক ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল। এই দু’টি উপাদান সংক্রমণজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৩) শরীর থেকে টক্সিন দূর করে
জায়ফলের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা লিভার এবং কিডনিতে জমা দূষিত পদার্থ বার করতে সাহায্য করে। ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে জায়ফল মিশিয়ে খেলে সামগ্রিক সুস্থতা বজায় থাকে।
৪) অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করে
জায়ফল স্নায়ুর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই ফলের মধ্যে রয়েছে মাইরিস্টিসিন এবং ম্যাগনেশিয়াম। এই দু’টি উপাদান ইনসমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস জলে এক চিমটে জায়ফলের গুঁড়ো মিশিয়ে খেলেই এই ধরনের সমস্যা বশে থাকবে।
৫) প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে
জায়ফলের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যানালজেসিক উপাদান রয়েছে। যা শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাঁরা অস্থিসন্ধির ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বা পেশিতে ব্যথা নিয়ে জর্জরিত, তাঁরা এই টোটকা মেনে দেখতে পারেন।
৬) হরমোনের সমতা বজায় রাখে
শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে হরমোনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। হরমোনের হেরফেরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই স্বাভাবিক জীবনে নানা রকম সমস্যা হয়। মেয়েদের ঋতুস্রাবজনিত সমস্যার নেপথ্যেও হরমোনের ভূমিকা রয়েছে। এই ধরনের সমস্যা বশে রাখতেও সাহায্য করে জায়ফল।
৭) রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে
জায়ফলের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম। নিয়মিত এক চিমটে খেলে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়া জায়ফলের মধ্যে রয়েছে ক্যালশিয়াম, আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজ়। এই সব উপাদান হার্টের শিরা, ধমনী এবং রক্ত সরবরাহ সংক্রান্ত রোগ নিরাময়েও সাহায্য করে।