মাশরুমের হরেক গুণ গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
মাশরুমকে কিন্তু মোটেই 'ব্যাঙের ছাতা' বলে অবহেলা করা যাবে না। ছত্রাককুলের সম্মান কার্যত একা হাতেই বাড়িয়ে দিয়েছে এই প্রজাতিটি। আগে বিশেষ প্রচলন না থাকলেও সম্প্রতি অনেকের রান্নাঘরেই দেখা মেলে মাশরুমের। এমনকি শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নাকি নিয়মিত খান মাশরুম। তবে মাশরুম খেলে কারও কারও অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রথম বার চেখে দেখতে চাইলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভাল।
১। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট: মাশরুম সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ‘ফ্রি র্যাডিক্যালের’ ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কোনও মৌল যখন ইলেকট্রন বিহীন অবস্থায় স্বাধীন ভাবে বিচরণ করে তখন তাকে ‘ফ্রি র্যাডিক্যাল’ বলে। এই ধরনের ‘ফ্রি র্যাডিক্যাল’ হৃদ্রোগ এবং ক্যানসারের মতো রোগের কারণ হতে পারে। তা ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে বার্ধক্যজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২। বিটা গ্লুকান: বিটা গ্লুকান এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার যা কোলেস্টেরলের সমস্যা দূর করে এবং হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। পাশাপাশি বিটা গ্লুকান রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমায়। ‘অয়েস্টার’ ও ‘শিতাকে’ নামক মাশরুমে সবচেয়ে কার্যকর বিটা গ্লুকান রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
৩। ভিটামিন বি: মাশরুম বি ভিটামিন সমৃদ্ধ, মাশরুমে রয়েছে রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড। এই উপাদানগুলি হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। রাইবোফ্লাভিন লোহিত রক্তকণিকার জন্যও ভাল। নিয়াসিন পাচনতন্ত্র ভাল রাখে এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখতে সহায়তা করে। প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী, পাশাপাশি এটি শরীরকে নানান প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরি করতেও সাহায্য করে।
৪। কপার: তামা লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে, লোহিত রক্তকণিকা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হয়। হাড় ও স্নায়ুর সুস্থতা বজায় রাখতেও তামা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রান্না করার পরেও, এক কাপ মাশরুম দেহের জন্য প্রয়োজনীয় দৈনিক তামার প্রয়োজনীয় পরিমাণের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করতে পারে।
৫। পটাশিয়াম: হার্ট, পেশী এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২/৩ কাপ রান্না করা ‘পোর্টোবেলো’ মাশরুমে একটি মাঝারি আকারের কলায় সমপরিমাণ পটাশিয়াম পাওয়া যায়।