পেশিতে টান ধরছে? ছবি: সংগৃহীত।
মার্কেটিং ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন সায়ন। কাজের প্রয়োজনে প্রায়ই দৌড়েদৌড়ি করতে হয় এ দিক-সে দিক। কিন্তু গত চার মাস ধরে সায়নের শরীর মোটেও ভালে যাচ্ছে না। মাসে এক বার জ্বর লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে হাঁচি-সর্দি।
ঋজুর প্রায়ই হাতে-কাঁধে ব্যাথা হচ্ছে। পেশিতে টান ধরছে।
রুমির আবার কোমরের ব্যথা। এক মাস ধরে। ব্যথার ওষুধে কমে ওষুধ খেলে, ওষুধ বন্ধ করলে যে কে সেই! সেই সঙ্গে মেজাজটাও যেন বিগড়ে থাকে! অবসাদ ঘিরে থাকে ইদানীং।
সমস্যাগুলি খুবই সাধারণ। কিন্তু জানেন কি, এই সমস্ত কিছুই হতে পারে ভিটামিন ডি-এর অভাবে?
জেনে নিন কোন কোন সমস্যা হলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন-ডির ঘাটতি হতে পারে।
হাড়ে ব্যথা
মূলত সূর্যালোকের উপিস্থিতিতে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। ক্যালিসয়াম, ভিটামিন-ডি শরীরের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হাড়ের সমস্যার অন্যতম কারণ। ঘন ঘন কোমরে ব্যথা হলে বা শরীরে অন্য অংশে হাড়ে ব্যথা হলে দেখতে হবে তা ভিটামিন ডি-র ঘাটতি কি না।
অবসাদ
মনখারাপের সঙ্গে ভিটামিনের সম্পর্ক? আশ্চর্য মনে হলেও তথ্য বলছে, শরীরে যদি ভিটামিন ডি যথাযথ মাত্রায় থাকে, তা হলে মেজাজও ভাল থাকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, শরীরে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমে গেলে মন ও মেজাজের ওপর তার প্রভাব পড়ে। অবসাদের পিছনে ভিটামিন ডি-র ঘাটতিকেও দায়ী করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া
বয়স্কদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-এর অভাব হাড়ের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। যার জেরে বয়স হলে শরীরে ব্যথার সমস্যাও বাড়ে। ভিটামিন ডি-এর অভাব হাড় ভঙ্গুর করে তোলে, সেই সঙ্গে অস্টিয়োপোরেসিস-এর সমস্যা বাড়ায়। ভিটামিন ডি-এর অভাব হাড় দূর্বল করে। যার ফল, বয়সকালে বেকায়দায় পড়ে গেলে বা কোনও ভাবে আঘাত পেলে গেলে সহজেই হাড় ভেঙে যায়।
পেশি টেনে ধরা, ব্যথা
কাজ করতে করতে মাঝে মধ্যেই পেশি টেনে ধরা বা ব্যথার সমস্যায় অনেকেই কমবেশি ভোগেন। সেটা কখনও কখনও হলে এক রকম। কিন্তু বার বার যদি এই ধরনের সমস্যায় কেউ ভোগেন, তা হলে কিন্তু সেটা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির দিকে ইঙ্গিত দেয়।
ঘন ঘন জ্বর-সর্দি
বয়স কম, এমনিতে তরতাজা হলেও অনেকেই আছেন, দু’দিন অন্তত জ্বর নয় তো ঠান্ডা লাগা বা অন্য শারীরিক অসুস্থতায় ভোগেন। এর কারণ হতে পারে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া কিন্তু ভিটামিন ডি-র ঘাটতিরই লক্ষণ।
চুল পড়ে যাওয়া
চুল পড়ে যাওয়ার একাধিক কারণ থাকে। তার মধ্যে শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকাটাও কিন্তু অন্যতম কারণ হতেই পারে।
দুর্বলতা ও ক্লান্তি
ঘুম ঠিকঠাক হচ্ছে। অথচ শরীরে যেন মনে হচ্ছে এনার্জি নেই। দিনভর ক্লান্তি ঘিরে ধরছে। দুর্বল লাগছে শরীর। সে ভাবে কোনও কারণ ছাড়াই যদি ক্রমাগত ক্লান্তি ঘিরে ধরে, তা হলে তা কিন্তু ভিটামিন ডি-র অভাবের জন্য হতেই পারে।
ক্ষত সারছে না
ক্ষতস্থান সেরে ওঠা ও নতুন চামড়া গজানোর ক্ষেত্রেও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি। স্বাভাবিক ভাবেই শরীরে এই ভিটামিন পর্যাপ্ত মাত্রায় না থাকলে ক্ষতস্থান সেরে উঠতে দেরি হয়।
তবে একই সঙ্গে এও মাথায় রাখতে হবে, এই সমস্ত উপসর্গ ভিটামিন ডি-র ঘাটতির জন্য যেমন হতে পারে, তেমন আরও নানা কারণেই হতে পারে। তাই এই ধরনের কোনও সমস্যা হলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাও জরুরি।