অফিসের ডেস্কে কলা চাষ হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
অফিসের ডেস্ক নানা রকম সাজানোর জিনিস বা গাছ দিয়ে সাজাই আমরা। সাজানো-গোছানো ডেস্ক হলে কাজেও বেশ মন বসে। সকাল সকাল অফিস এসে পরিপাটি ডেস্কে বসলে মনটাও ফুরফুরে থাকে। এই পর্যন্ত তো ঠিক আছে। তাই বলে ডেস্কে কিনা ফলের চাষ? এমন শুনেছেন কস্মিনকালেও? তেমনটাই কিন্তু হচ্ছে চিনে। সেখানকার একটি অফিসে একদল কর্মী তাঁদের ডেস্কে কাঁদি কাঁদি কলা ফলিয়েছেন। গাছ থেকে পাকা কলা ছিঁড়ে খেয়ে সকলেরই নাকি মন-মেজাজ সতেজ হয়ে গিয়েছে। কাজের ক্লান্তি উধাও হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আনন্দের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন সে অফিসের কর্মীরা।
ঘরে-বাইরে বাড়তে থাকা কাজের চাপ, উদ্বেগজনিত সমস্যা নতুন নয়। সরকারি-বেসরকারি যে যেমন সংস্থাতেই কাজ করুন না কেন, মানসিক টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় কমবেশি সকলকেই। পেশাগত ক্ষেত্রে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থাকবেই। তাই মন ভাল রাখতে নানা রকম পরামর্শ দিয়ে থাকেন মনোবিদেরা। মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন টোটকার মধ্যে একটি হল বাগান করা বা গাছের পরিচর্যা। গাছের যত্ন নিলে মন শান্ত থাকে। মনের যাবতীয় ভার হালকা হয়। চিনা কর্মীরা জানিয়েছেন, সারাদিন অফিস সামলে আর বাগান করার সময় কোথায়? তাই অফিস ডেস্ককেই ছোটখাটো বাগানের চেহারা দিয়েছেন তাঁরা। কলা গাছ লাগানো, তার পরিচর্যায় যে মানসিক শান্তি পাওয়া গিয়েছে, তা নাকি অতুলনীয়।
টিং ঝিং জ়িয়াও লু-র বুদ্ধিতেই অফিস ডেস্কে কলাগাছ লাগানো হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, কাজের ফাঁকে প্রায় সকলেই গাছের যত্ন নিয়েছেন। গাছকে বাড়তে দেখে আহ্লাদে আটখানা হয়েছেন শিশুর মতোই। যবে থেকে কলা ধরেছে, তবে থেকেই সকলে গাছ নিয়ে চিন্তিত। যেন অফিসে নতুন অতিথি এসেছে। সবজে কলা যখন ধীরে ধীরে পাকতে শুরু করে, তাতে হলুদ রঙ ধরে, তখন যেন মনে হয়েছে সেটাই জীবনের সেরা পাওয়া। গাছ নিয়ে ভাবনার মাঝে কাজের উদ্বেগ কোথাও যেন উবে গিয়েছিল। মানসিক চাপও কমেছিল কমবেশি সকলেরই।
সপ্তাহভর এখন কলা খাওয়া হচ্ছে সেই অফিসে। ওই অফিসেরই এক কর্মী ইয়াং। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে লিখেছেন, মনে হচ্ছে অফিস ডেস্কটা যেন বৃষ্টিঅরণ্য হয়ে গিয়েছে। সারি সারি সবুজ গাছে ফল ধরেছে। এখন আর মন খারাপ হয় না। একঘেয়েও লাগে না। বরং কাজে উৎসাহ অনেক বেড়ে গিয়েছে। তবে চিনা কর্মীরা শুধু কলা ফলিয়েই থেমে থাকেননি। কেউ কেউ নাকি আবার আনারসের ফলনও শুরু করেছেন।