কেন ওজন বাড়ছে শিশুদের। ছবি: ফ্রিপিক।
ওজন বাড়ছে ছোট থেকেই। শিশুদের স্থূলতা ক্রমেই চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। অতিরিক্ত ওজন ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক, শরীরচর্চার অভাব শিশুদের স্থূলতার অন্যতম কারণ। সন্তানের মন রাখতে বাবা-মায়েরাও বাইরের খাবার কিনে দিচ্ছেন। শিশুর হাতে মোবাইল, ট্যাব ধরাচ্ছেন। ফলে ছোটরা এখন বাইরে বেরিয়ে খেলাধূলার বদলে ঘরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল বা ট্যাব নিয়ে বসে আছে। চিকিৎসক সুব্রত গড়াই জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শরীরচর্চা না করার কারণে শিশুদের আলস্য বাড়ছে। ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’ হানা দিচ্ছে ছোট থেকেই।
চিকিৎসকের কথায়, আমরা সারাদিন যা যা করছি, কী খাচ্ছি, কতটা শরীর নাড়াচাড়া করছি, কতটা সংযম রাখছি রোজকার যাপনে, এই সবকিছুই কিন্তু মেটাবলিক সিনড্রোমের সঙ্গে জড়িত। এশিয়দের মধ্যে বিশেষ করে ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়। রোগের লক্ষণ দেখা দেয় ছোট থেকেই। অথচ আমরা খেয়াল করি না। বয়স বাড়লে রোগটা পাকাপোক্তভাবে বসে যায় শরীরে।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়? চিকিৎসকের কথায়, হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাবে, পেট-কোমরে থলথলে চর্বি জমবে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে। রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়া, ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া সব মিলিয়ে যে রোগের জন্ম দিচ্ছে তাই হল ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’। আর এর প্রভাব পড়ছে হার্টের উপরে।
বাবা-মায়েরা কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?
ছোটবেলা থেকেই শিশুকে নির্দিষ্ট নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। মা-বাবাকেও মানতে হবে কিছু নিয়ম। রান্না করতে ইচ্ছে করছে না বলে শিশুকে যথেচ্ছ সাপ্লিমেন্ট বা ‘হেলথ ড্রিঙ্ক’ খাইয়ে রাখা, কিংবা যখন তখন বায়না করলেই চকোলেট দিয়ে বায়না মেটানো, ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসানো এ সব অভ্যাস বদলাতেই হবে।
ছোট থেকে শরীরচর্চার অভ্যাস তৈরি হলে মেদ জমার প্রবণতা কমে। শিশুকে নিয়ম করে যোগাসন অভ্যাস করাতে হবে। তার জন্য অভিজ্ঞ যোগাসন প্রশিক্ষকের পরামর্শও জরুরি। প্যাকেটজাত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই দেওয়া যাবে না শিশুকে। ঝালমশলার খাবারের বদলে রোজকার ডায়েটে রাখতে হবে ডাল, মাছ, মুরগির মাংস, সবুজ শাকসব্জি, ফল আর সয়া প্রোটিন। সব রকম খাবারই রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। তাতে যেমন প্রোটিন থাকবে, তেমনই ফ্যাট ও শর্করাও। সবই রাখতে হবে পরিমাণ মতো। সে ক্ষেত্রে ফ্যাট নিতে হবে প্রয়োজনীয় মাছ-মাংস বা রান্নায় যেটুকু তেল লাগছে তা থেকেই। বাড়তি ফ্যাটযুক্ত খাবার তালিকায় না রাখাই ভাল।