টিএলসি ডায়েটে আপনি রোজ কত ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন, সেই বিষয় সতর্ক থাকতে হবে।
জীবনধারায় অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া ও ব্যায়ামে অনীহা ইত্যাদি নানা কারণে উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা ঘরে ঘরে। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেই সবার আগে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। এই রোগ বাড়তে দিলে, হৃদ্রোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই অসুখ বাড়লে ওষুধের সাহায্য নিতেই হবে, তার পাশাপাশি ডায়েটে কিছু বদল আনলেও রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘থেরাপিউটিক লাইফস্টাইল চেঞ্জেস’ বা টিএলসি ডায়েট মেনে চললে এই অসুখকে জব্দ করা যায়। তাঁদের মতে, এই ডায়েট করলে এই রোগ পুরোপুরি সেরে যাবে এমনটা নয়। এই ডায়েট নিয়মিত মেনে চললে এই রোগের প্রকোপ কমবে, কমতে পারে ওষুধের মাত্রাও। শুধু কোলেস্টেরল নয়, এই ডায়েট রক্তচাপ কমাতে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে, এমনকি, ওজন ঝরাতেও বেশ কার্যকর। হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও এই ডয়েট বেশ উপকারী।
এই ডায়েটের খুঁটিনাটি
এই ডায়েটে আপনি রোজ কত ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন, সেই বিষয় সতর্ক থাকতে হবে। আপনার উচ্চতা ও ওজন অনুযায়ী যতটুকু ক্যালোরির প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই খেতে হবে। মোট ক্যালোরির ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ যেন আসে উপকারি ফ্যাট থেকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৭ শতাংশের বেশি থাকলে চলবে না। প্রতি দিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ডায়াটারি ফাইবার খেলে চলবে না৷ ১০ থেকে ২৫ গ্রাম দ্রবণীয় ফাইবার খেতে হবে রোজ৷ দিনে অন্তত দু’গ্রাম উদ্ভিজ্জ স্টেরোল বা স্ট্যানোল (বাদাম বা নানা রকম বীজে থাকে) খেতে হবে৷ কেবল ডায়েট করলেই হবে না, দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করতে হবে।
কী কী খাওয়া যায়?
শাকসব্জি, ফল, খোসাসমেত শস্যদানা (ব্রাউন রাইস, বাজরা, রাগি, ওট্স, কিনুয়া), বাদাম, চিয়া সিডস, ফ্ল্যাক্স সিডস, বিভিন্ন প্রকার ডাল, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, চামড়া ছাড়ানো মুরগির মাংস ইত্যাদি খেতে পারেন। দেশি মুরগি খেতে পারলে আরও ভাল। মিষ্টি জলের মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছও খেতে পারেন।
কী কী খাওয়া চলবে না?
রেড মিট, প্রক্রিাজাত মাংস, চিজ, মাখন, দই, ফ্যাটযুক্ত দুধ, ডিমের কুসুম— এই খাবারগুলি টিএলসি ডায়েট চলাকালীন খাওয়া যাবে না। প্যাকেটজাত চিপ্স, কেক, কুকিজও এড়িয়ে চলতে হবে।
এই ডায়েটে খাবার এতটাই হিসাব করে খেতে হয় যে, সাধারণের পক্ষে এই ডায়েট মেনে চলা মুশকিল। তাই পুষ্টিবিদদের সাহায্য ছাড়া এই ডায়েট মানা সম্ভব নয়।