ঘর মুছলে কি আদৌ মেদ ঝরে? ছবি: সংগৃহীত।
এক দিন গৃহসহায়িকা কাজ করতে না আসায় কী কী কাজ সেরে অফিসে আসতে হল সেই ফিরিস্তি দিচ্ছিলেন সহকর্মীকে। শুনে একটু খারাপ লাগলেও আশ্বস্ত করার জন্যে তিনি বললেন, “ভালই হয়েছে। মাঝে-মধ্যে একটু আধটু বাড়ির কাজ করলে ক্ষতি নেই। জিমে যাওয়ার সময় পাচ্ছিস না। এতেই বেশ খানিকটা মেদ ঝরবে।” শুনে তো আপনি প্রায় আকাশ থেকে পড়লেন। গুচ্ছের টাকা খরচ করে এত মানুষ মেদ ঝরাতে, ওজন কমাতে এত কিছু করছেন। কয়েক দিন ঘর মুছে আর কাপড় কেচেই যদি সব হয়ে যেত, তা হলে শরীরচর্চা করার সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের দরজায় তালা পড়ে যেত। ঘরের কাজকর্ম করলে ঘাম ঝরে ঠিকই, কায়িক শ্রমও হয়। তাই বলে আলাদা করে জিমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না, এমন ধরাণা কি আদৌ ঠিক?
শুনতে সহজ মনে হলেও ঘরের কাজ করা ততটাও সহজ নয়। কারণ, নিখুঁত করে ঘরের সমস্ত কাজ করতে গেলে যথেষ্ট শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। তবে আধুনিক মপের সাহায্যে ঘর মুছলে কিন্তু চলবে না। একেবারে হাঁটু মুড়ে, পেট চেপে মাটিতে বসে মোছার কাজ করতে হবে। বার বার ওঠা-বসার অভ্যাসে যেমন অস্থিসন্ধির নমনীয়তা বাড়ে, তেমনই স্ট্রেচিং-এর অনেকটাই করে ফেলা যায় এই কাজের মাধ্যমে। তবে, প্রশিক্ষকরা বলছেন, ঘরের কাজ করে কে কী রকম ফল পাবেন, তার পুরোটাই নির্ভর করছে কাজটির ইন্টেনসিটি বা তীব্রতার উপর। সাধারণত ঘণ্টাখানেক ধরে ঘর ঝাঁট দেওয়া, মোছার মতো কাজ করলে তা জিমে মাত্র ২০ মিনিট হালকা শরীরচর্চা করার সমান ক্যালোরি পোড়াতে পারে।
তবে ঘরের কাজকেই যদি শরীরচর্চার অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন, সে ক্ষেত্রে তা রুটিনের মধ্যে এনে ফেলতে হবে। শখ করে বা প্রয়োজন পড়লে এক-আধ দিন ঘরের কাজ করলে কিন্তু কোনও ফলই মিলবে না। পাশপাশি আরও একটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। যাঁদের কোমর বা হাঁটুর সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই ধরনের কাজ উল্টে বিপত্তি ঘটাতে পারে। সুতরাং শরীরচর্চার ক্ষেত্রে কার জন্যে কোন মাধ্যমটি উপযুক্ত, তা চিকিৎসক এবং প্রশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তবেই নির্বাচন করা উচিত।