কিডনিতে পাথর হয় কেন? ছবি: সংগৃহীত।
একটা বয়সের পর নারী-পুরুষ সকলেরই হাড়ের জোর কমতে থাকে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালশিয়ামের ওষুধ খেয়ে থাকেন অনেকেই। ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর মহিলাদেরও অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশির ভাগেরই ধারণা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম শরীরে গেলে তা কিডনি বা মূত্রনালিতে জমতে থাকে। পরবর্তী কালে তা পাথরে পরিণত হয়। এই ধারণা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ঠিক না হলেও পুরোপুরি ভুল নয়। কিন্তু এই ধারণা করার আগে ক্যালশিয়ামের ওষুধ বা সাপ্লিমেন্টের সঙ্গে কিডনির পাথরের সম্পর্ক ঠিক কেমন, তা জেনে রাখা উচিত। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম, অক্সালেট এবং ফসফরাস মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে এই সমস্ত উপাদান মূত্রনালি কিংবা কি়ডনিতে জমতে শুরু করে। বেকায়দায় এমন কোনও অংশে তা আটকে গেলে তখন পিঠ, কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়, কারও কারও আবার সংক্রমণের চোটে জ্বরও আসে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যাশিয়ামের ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট থেকে কিডনিতে যে ধরনের সমস্যা হতে পারে, তা ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে হয় না। গবেষকেরা বলছেন, এই ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার উল্টে কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে দিতে পারে। কারণ, খাবারের মধ্যে যে ধরনের ক্যালশিয়াম থাকে, তা বিপাক করার নিজস্ব ক্ষমতা শরীরের রয়েছে। কিন্তু বাইরে থেকে সাপ্লিমেন্ট খেলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে তা খাপ খাইয়ে উঠতে পারে না। তাই মূত্রের মধ্যে ক্যালশিয়াম, অক্সালেট বা ফসফরাসের মাত্রা বাড়তে থাকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে, এই সমস্ত খনিজ মূত্রনালি এবং সংলগ্ন অংশে জমতে থাকে।
ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেলেই যে কিডনিতে পাথর জমবে, এই ধারণা সকলের জন্যই প্রযোজ্য নয়। সাধারণ খাবারের মধ্যে যতটুকু খনিজ থাকে, তা-ও পাথর হওয়ার জন্য যথেষ্ট। কারও কারও ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা জিনগত। তাই ক্যালশিয়ামের ওষুধ না খেলেও সতর্ক থাকতে হবে।