কারা নকচুরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন? ছবি: সংগৃহীত।
রাত জেগে সিরিজ় কিংবা রিল দেখার মাঝে বার বার উঠতে হয়। বাধ সাধে প্রস্রাবের বেগ। এমন অভ্যাসে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র নষ্ট হয়। রক্তে শর্করা বেশি থাকলে যে এই ধরনের সমস্যা হয়, তা অনেকেই জানেন। কিন্তু কমবয়সিদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে কেন? চিনের একদল গবেষক জানিয়েছেন, যাঁদের রাত জেগে একনাগাড়ে ‘বিঞ্জ ওয়াচিং’-এর অভ্যাস রয়েছে, তাঁদেরই বহুমূত্র বা নকচুরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয়। ‘নিউরোলজি অ্যান্ড ইউরোডায়নামিক্স’ জার্নালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় একটি সমীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৩,২৯৪ জনের মধ্যে ৩২ শতাংশই নকচুরিয়ায় আক্রান্ত। যাঁদের বেশির ভাগেরই বয়স ২০ বছরের মধ্যে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, যাঁদের রাতে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে মোবাইল দেখার অভ্যাস রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪৮ শতাংশেরই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
নকচুরিয়ার সঙ্গে ‘বিঞ্জ ওয়াচিং’-এর প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও যোগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণার প্রয়োজন। তবে রাত জাগার সঙ্গে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের যোগ রয়েছে। এই ডায়াবিটিস কিন্তু নকচুরিয়া বা বহুমূত্র রোগের অন্যতম কারণ।
কী কারণে হয় এই রোগ?
কর্মসূত্রে বা ওয়েব সিরিজ দেখার জন্য অনেককেই নিয়মিত রাত জাগেন। ‘বডি ক্লক’ পরিবর্তন হলে নকচুরিয়ার সমস্যা দেখা যায়। ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’ থাকলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। অ্যান্টি সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ বা কিডনির ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়। রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। হার্টের অসুখ, কিডনিতে স্টোন এবং প্রস্টেটের সমস্যা থেকেও এমনটা হতে পারে। শুধু পুরুষদেরই নয়, মেয়েরাও অনেকে গর্ভাবস্থায় এবং মেনোপজের পর নকচুরিয়া-য় ভোগেন । কিডনিতে বা মূত্রাশয়ে সংক্রমণের কারণেও কিন্তু এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।
রেহাই মিলবে কোন উপায়?
নকচুরিয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। সন্ধ্যার পর থেকে জল বা অন্য পানীয় পানের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে বেশি জল না খাওয়াই ভাল। মদ্যপান যথাসম্ভব এড়িয়ে যান। কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা বা ডায়াবিটিস থাকলেও বার বার প্রস্রাবের বেগ আসে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভাল।