ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পা ফোলা বা পায়ে ব্যথার মতো লক্ষণগুলিই পরবর্তীতে বিশালাকার ধারণ করতে পারে। ছবি- প্রতীকী
দীর্ঘ দিন ডায়াবিটিসের সঙ্গে ঘর করছেন, তাই নিয়ম মেনে ওষুধ, খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা সবই করেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে হার্ট, কিডনি, চোখের বিশেষ যত্ন নিতে হয় তা-ও অজানা নয়। কিন্তু যেদিকটিতে আমরা একেবারেই নজর দিই না তা হল পা। এমনিতে পা ফোলা, ফাটা বা পায়ে ব্যথার মতো ঘটনা তো সবারই হয়, তাই এ সব নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাননি। তবে গত বার রুটিন চেক আপ করানোর সময় ডাক্তারবাবুর কাছে শুনেছেন বিশেষ জুতোর কথা। কিন্তু সেই জুতো যে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে কিনতে হয়, সে কথা জানতেন কী?
এমনিতেই শরীরের যাবতীয় ভার বহন করে যে পদযুগল, তার দিকে আমরা একটু কমই নজর দিই। বছরে দু-এক বার সালোঁতে গিয়ে পেডিকিওর করা আর দেখতে সুন্দর এমন জুতো কেনা ছাড়া পা নিয়ে আমাদের কারও বিশেষ মাথাব্যথা নেই। তবে, আপাত ভাবে তুচ্ছ মনে হলেও ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পা ফোলা বা পায়ে ব্যথার মতো লক্ষণগুলিই পরবর্তীতে বিশালাকার ধারণ করতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, অনেক দিন ধরে রক্তে শর্করা বেশি মাত্রায় থাকলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পাশাপাশি রোগীর স্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তবাহী শিরাগুলির দেওয়াল পুরু হতে থাকে। ফলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। যার প্রভাব অনেকটাই পড়ে পায়ে। পা ফোলা, পা ফাটা বা পায়ে ব্যথা তো বটেই অনেক সময় পায়ে জ্বালা বা কাঁটা ফোটার মতো অনুভূতিও হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে ‘নিউরোপ্যাথি’ বলা হয়। সচেতনতার অভাবে পায়ে ঘা পর্যন্ত হতে পারে। তাই প্রতিদিন ঈষদুষ্ণ গরম জলে পা ডুবিয়ে রাখা, পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা ছাড়াও জুতো নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত।
ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শুধু জুতো নির্বাচনই নয়, জুতো কেনার সময়ের উপরেও তাদের পায়ের স্বাস্থ্য কেমন থাকবে তা নির্ভর করে। জুতো কতটা আরামদায়ক হবে তা নির্ভর করে জুতোর গুণগত মান এবং পায়ের সঠিক মাপের উপর। খুব বেশি আঁটসাটো বা ঢিলে নয়, পায়ের সঠিক মাপের, বাতাস চলাচল করে এমন নরম জুতো পরতেই নিদান দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে খুব বেশি গরম বা খুব ঠান্ডা এবং বাইরের সাময়িক চোট, আঘাত থেকে পা দু’টিকে বাঁচিয়ে রাখতে মোজা পরার পরামর্শও দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সারাদিনের কার্যকলাপের পর ডায়াবিটিস রোগীদের পা বিকালের দিকে একটু বেশিই ফুলে থাকে। তাই সঠিক মাপ পেতে গেলে বিকেলের সময় জুতো কেনাই শ্রেয়।