‘চিনি’ খেয়ে ডায়াবিটিস কমানো সম্ভব? ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবিটিস ধরা পড়লে জীবন থেকে যে খাবারটি চিরকালের মতো বাদ চলে যায়, তা হল মিষ্টি। চা থেকে রান্না, চিনিহীন খাবারদাবারেই অভ্যস্ত হতে হয় ডায়াবেটিকদের। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তা সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা করা, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা— এত কিছু করেও অনেক সময় সুস্থ থাকা যায় না। শর্করার মাত্রা সেই বিপদসীমা পেরিয়ে যায়। শর্করার মাত্রা যাতে বেড়ে না যায়, তার জন্য চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হয়। আবার শর্করার মাত্রা হাতের মুঠোয় রাখতেই ভরসা রাখা যায় ‘চিনির’ উপর। এটা শুনেই অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন। তবে এ হল দারচিনি, ডায়াবিটিসের অন্যতম দাওয়াই।
দারচিনিতে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, কোলাইন, লাইকোপেনের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে ভরপুর মাত্রায়। কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারচিনির ভূমিকা কতটা?
টাইপ-২ ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন কমে যায়। দারচিনি গ্লুকোজ গ্রহণের জন্য কোষগুলিকে উদ্দীপিত করে। দারচিনি খেলে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এই হরমোন রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও দারচিনিতে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক যৌগের উপস্থিতি মিলেছে। যা সরাসরি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
শুধুমাত্র ডায়াবিটিসের সমস্যাই নয়, পেটের বিভিন্ন সমস্যার উপশমেও দারচিনি গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েরিয়ার মোকাবিলা করতে দারচিনি ওষুধের মতো কাজ করে। দারচিনির ছাল অনেক সময়ে দাঁতের যন্ত্রণা, গাঁটের ব্যথার ক্ষেত্রে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া, সর্দি-কাশি হলেও দারচিনি খেলে উপশম মেলে।
কোন কোন উপায়ে ডায়েটে দারচিনি রাখা যেতে পারে?
১) সারা রাত এক গ্লাস জলে একটি বড় টুকরো দারচিনি ভিজিয়ে রেখে দিন। পর দিন সকালে উঠে খালি পেটে দারচিনি ভেজোনো জল খান।
২) দারচিনি দিয়ে চা বানিয়েও খেতে পারেন। দারচিনিতে মিষ্টির স্বাদ রয়েছে। এই চা খেতে মন্দ লাগে না।
৩) অনেকেই সকালের জলখাবারে ওট্স খান। দুধে ওট্স মিশিয়ে খাওয়ার সময়ে এক চিমটে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। স্বাদ বাড়বে আর স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।