Cancer

পাঁচ বছর পর্যন্ত শরীরে লুকিয়ে থাকতে পারে স্তন ক্যনসারের লক্ষণ! সাবধান হবেন কী ভাবে?

চিকিৎসকরা বলছেন, স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছেই। তাঁদের মতে, ‘সেল্‌ফ ডিটেকশন’-এর বিকল্প নেই এ ক্ষেত্রে। কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৪৯
স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত কিনা, বুঝবেন কী ভাবে?

স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত কিনা, বুঝবেন কী ভাবে? ছবি: শাটারস্টক।

স্তন ক্যানসার। তিরিশ পেরোনো ভারতীয় মহিলাদের এর থেকে বড় ভয় সম্ভবত আর কিছু নেই।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছেই। তাঁদের মতে ‘সেলফ ডিটেকশন’-এর বিকল্প নেই এ ক্ষেত্রে। ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ক্রমশই এই রোগের প্রভাব বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, এ দেশে ইদানীং স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ দেশে ৩০-৫০ বছর বয়সিরা এই অসুখের শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। বয়স ২৫ পেরোলেই, অস্বস্তি থাক বা না থাক, চিকিৎসকদের কাছে এসে বছরে এক বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো উচিত। কোনও রকম অস্বস্তি থাকলে তো তা করাতে হবেই। মনে রাখতে হবে, স্তনে মাংসপিণ্ড (লাম্প) বা টিউমার হওয়া মানেই কিন্তু ক্যানসারের ঝুঁকি আছে, এমনটা নয়। বরং ১০-১৫ শতাংশ টিউমারেই এই ভয় থাকে, কিন্তু সেই চিকিৎসা দ্রুত শুরু হওয়া দরকার।

Advertisement

স্তন ক্যানসারের লক্ষণ বাহুমূলেও দেখা দিতে পারে।

স্তন ক্যানসারের লক্ষণ বাহুমূলেও দেখা দিতে পারে। ছবি: শাটারস্টক

কী ভাবে বুঝবেন শরীরে বাসা বাঁধছে কি না এমন ঘোরতর অসুখ? কেবল মাত্র লাম্প থাকলেই তা কি ভয়ের? না কি এই অসুখের পিছনে ঘাপটি মেরে থাকে আরও নানা উপসর্গ? অনেকের ক্ষেত্রে আবার কোনও উপসর্গ ছাড়াই শরীরে বাসা বাঁধে এই মারণরোগ। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে মেটাস্ট্যাটিক ব্রেস্ট ক্যানসার। এই ধরনের ক্যানসার সাধারণত উৎপত্তিস্থল থেকে শরীরের বাকি অংশে ছড়াতে শুরু করে, ক্যানসারের একেবারে শেষ পর্যায় ধরা পড়ে রোগ। বছরে অন্তত এক বার স্তন পরীক্ষা করালে এই মারণরোগের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব। দু’বছরে এক বার ম্যামোগ্রাফি করানো দরকার।

এক্স-রে ম্যামোগ্রাফি, স্তনের আল্ট্রাসাউন্ড, এমআরআই, সিটি এবং পিইটি স্ক্যানের মাধ্যমে স্তন ক্যানসার নির্ণয় করা সম্ভব। স্তন ক্যানসার ২ থেকে ৫ বছর ধরে শনাক্ত না-ও হতে পারে এবং তাই উপসর্গহীন ক্যানসারের ক্ষত্রে স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব অনেক।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্তন ক্যানসারের লক্ষণ অনেক সময়ে বাহুমূল বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়। এ ছাড়া স্তনবৃন্তের আশপাশেও এই ধরনের লাম্প থাকে যেগুলি টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে না। এমন কিছু দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কোনও রকম র‌্যাশ নেই স্তনে, তবু চুলকানির মতো অনুভূতি হচ্ছে, এটাও কিন্তু ক্যানসারের লক্ষণ। স্তনে টিউমার থাকলে তা আশপাশের টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তার ফলে স্তনে একটা ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। এরই সঙ্গে স্তনে লালচে ভাবও থাকে। স্তনে হাত দিলে বা চাপ দিলে ব্যথাও লাগে। কাঁধ এবং ঘাড়ের ব্যথাও ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। কারণ, এই ক্যানসার স্তন থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে শরীরের এই অংশগুলিতে। স্তনের আকার বিকৃত হলে কখনওই ফেলে রাখবেন না। অন্তর্বাস পরে থাকার সময়ে যদি কোনও ঘর্ষণ বা ছড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়, বিছানায় শোয়ার সময়ে যদি ব্যথা লাগে, তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করবেন না। স্তন্যপান করাচ্ছেন না অথচ স্তনবৃন্ত থেকে অল্প অল্প দুধের মতো তরল পদার্থ নিঃসরণ হচ্ছে, এমনটা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাবেন। এটি স্তন ক্যানসারের অন্যতম বড় লক্ষণ।

স্তনবৃন্ত হল শরীরের অন্যতম সংবেদনশীল অংশ। যদি দেখেন যে, স্তনবৃন্ত স্পর্শ করলেও তেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে না, বা একেবারেই অনুভূতিহীন হয়ে গিয়েছে, তবে স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ক্যানসারের প্রথম পর্যায়ের লক্ষণ। এ ক্ষেত্রেও দেরি না করে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়াই ভাল।

আরও পড়ুন
Advertisement