জিরো ক্যালোরি পানীয় উপভোগ করছেন? ছবি: ইনস্টক।
সারা দিনে কতটা পরিমাণ চিনি শরীরে যাচ্ছে, সেই অঙ্ক যে শুধু ডায়াবিটিস রোগীদের চিন্তার কারণ, এমনটা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্য সচেতন যাঁরা, তাঁরাও খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করা অতিরিক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ে বেশ সতর্ক। তবে এ বিষয়ে কমবেশি ধারণা থাকলেও, সকলেই যে এক বাক্যে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার ছেড়ে দিতে পারেন, তা নয়। পছন্দের মিষ্টি পদ, নরম পানীয় বা আইসক্রিম খেতে না পারার দুঃখ ভোলাতে অনেকেই সুগার ফ্রি দেওয়া খাবার খেয়ে থাকেন। তবে কারও কারও মতে, চিনির বিকল্প হিসাবে এই কৃত্রিম চিনির অতিরিক্ত ব্যবহারও কিন্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু মিষ্টি বা রান্নায় নয়, কেক, চকোলেট, বেক্ড খাবার— সবেতেই ক্যালোরির পরিমাণ কমানোর জন্য এই জাতীয় রাসায়নিক নির্ভর কৃত্রিম চিনির ব্যবহার বেড়েছে। কী ধরনের কৃত্রিম চিনিতে ক্যালোরির পরিমাণ কেমন, সে বিষয়ে ধারণা থাকা দরকার।
সুগার অ্যালকোহল
সর্বিটল, জ়াইলিটল, ল্যাক্টিটল, ম্যান্নিটল, ইরিত্রিটল এবং ম্যাল্টিটলের মতো রাসায়নিকে ক্যালোরির পরিমাণ সাধারণ চিনির চেয়ে সামান্য কম। সুগার অ্যালকোহলের মিষ্টত্ব নির্ভর করে কোন খাবারে তা ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর।
সিন্থেটিক চিনি
স্যাকারিনের মতোই দু’টি যৌগ ‘অ্যাজ়পারটেম’ এবং ‘সুক্রালোজ়’-এ ক্যালোরি একেবারে নেই বললেই চলে। খাবারে ব্যবহারের সুবিধার জন্য এগুলি ট্যাবলেট বা গুঁড়ো, যে কোনও ভাবেই ব্যবহার করা যায়।
প্রাকৃতিক সুইটনার
চিনির বিকল্প হিসাবে অনেকে ‘স্টেভিয়া’র মতো বিভিন্ন গাছের নির্যাস থেকে তৈরি প্রাকৃতিক চিনি ব্যবহার করেন। এই মিষ্টিজাতীয় খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং ক্যালোরি— শূন্য।
কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে?
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে দেহের অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে এবং দাঁতের যত্নে চিনির বদলে এই জাতীয় ‘সুগার ফ্রি’ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন অনেকেই। তবে ক্যালোরির পরিমাণ কম বলে এই রাসায়নিক অতিরিক্ত ব্যবহার কিন্তু অন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, বড়রা তো বটেই, ছোটদের ক্ষেত্রেও চিনি ব্যবহারে লাগাম টানা উচিত। দু’বছরের নীচে শিশুদের ‘সুগার ফ্রি’ খাবার না খাওয়ানোই ভাল। অতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি দেওয়া খাবার খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়াও পেটফাঁপা, পেট খারাপ এবং ডায়েরিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে কৃত্রিম চিনির প্রভাবে।