Air Pollution

বিষবাষ্পে বাড়ছে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা? বায়ুদূষণ কতটা ক্ষতি করতে পারে হার্টের, জানাল গবেষণা

গবেষকেরা দেখেছেন, দৈনিক প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ১০ ও পিএম ২.৫-এর পরিমাণ যথাক্রমে ১০০ ও ৬০ মাইক্রোগ্রাম অতিক্রম করলে তা জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:২৫
Air pollution conditions carry health risks that are as hazardous as smoking ten cigarettes per day

বায়ুদূষণ কী ভাবে ক্ষতি করে হার্টের? প্রতীকী ছবি।

বাতাসে ভাসমান দূষিত কণা ও গ্যাসের কারণে ক্ষতি হতে পারে হৃদ্‌যন্ত্রের। বায়ুদূষণের কারণে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা বাড়ছে। বেড়ে যাচ্ছে উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ। বাড়ছে কিডনির নানা জটিল অসুখও। ‘দ্য ল্যানসেট’ বিজ্ঞানপত্রিকার একটি প্রতিবেদন থেকে এই খবর জানা গিয়েছে।

Advertisement

গবেষকেরা দেখেছেন, দৈনিক প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ১০ ও পিএম ২.৫-এর পরিমাণ যথাক্রমে ১০০ ও ৬০ মাইক্রোগ্রাম অতিক্রম করলে তা জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। ভাসমান দূষকের ক্ষতি করার ক্ষমতার নিরিখে ‘এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স’ (একিউআই) হিসাব করা হয়। অতিসূক্ষ্ম বলেই পিএম ২.৫ নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের দেহে প্রবেশ করলে ফুসফুস, হার্ট ও মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যায়। এই পিএম বা ‘পার্টিকুলেট ম্যাটার’ আসলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা, যার মধ্যে কার্বন ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ মিশে থাকে। শীতে ভারতের বড় শহরগুলিতে বাতাসের গুণগত মানের অনেকটাই অবনতি হয়। তখন বাতাসে ভাসমান দূষিত কণার মাত্রা বেড়ে যায়, যা শ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে সরাসরি হৃদ্‌পেশি ও হৃদ্‌পিণ্ডের রক্তনালির ক্ষতি করে। ফলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা যায়, যা হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা কয়েকগুণে বাড়িয়ে দেয়।

কিছু দিন আগেই ‘দ্য ল্যানসেট’-এর অন্য একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, পৃথিবীর দূষিত শহরগুলির তালিকায় লাহোর ও দিল্লির পরে কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকাও রয়েছে। গবেষকেরা বলছেন, বাতাসে ভাসমান দূষিত কণার মাত্রা বাড়লে শরীরে গ্যালেক্টিন প্রোটিনের পরিমাণ বাড়তে থাকে, যা হৃৎপিণ্ডে গভীর ক্ষত তৈরি করতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘মায়োকার্ডিয়াল ফাইব্রোসিস’।

বায়ুদূষণ ‘কার্ডিয়াক অ্যারিদ‌্‌মিয়া’-র আশঙ্কাও বাড়িয়ে দেয়। আমাদের হৃদ্‌যন্ত্র মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার পাম্প করে অক্সিজেনযুক্ত বিশুদ্ধ রক্ত শরীরের কোষে কোষে পৌঁছে দেয়। এই পাম্প করার ক্ষমতাকে চালনা করার জন্য হার্টের নিজস্ব পেসমেকার থাকে, যাকে বলে সাইনাস নোড (এসএ নোড)। এই সাইনাস নোডের কাজ হল হৃৎস্পন্দন তৈরি করা। ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছে হার্টের এই নিজস্ব পেসমেকার। বৈদ্যুতিক স্পন্দন তৈরি করছে। কিন্তু কোনও ভাবে যদি এই সাইনাস নোড ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখনই হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বায়ুদূষণ এই সাইনাস নোডের ক্ষতি করে। হৃদ্‌রোগের বাড়বাড়ন্ত ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পিছনে এটি কিন্তু একটি বড় কারণ।

দূষণ থেকে বাঁচতে সব সময়েই বাইরে বেরোলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বেশি ধোঁয়া-ধুলো আছে, এমন জায়গায় যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। বাড়ির ভিতরের বাতাসেও দূষিত কণা মিশে থাকে। তাই বাড়িতে শিশু বা বয়স্করা থাকলে, বাড়ির বাতাস বিশুদ্ধ রাখার জন্য এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি এমন জায়গায় থাকেন যেখানে দূষণের মাত্রা খুব বেশি, তা হলে এই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন