বার্ড ফ্লু ভাইরাস বাতাসেও ছড়াতে পারে? গবেষণায় কী দেখলেন বিজ্ঞানীরা? ফাইল চিত্র।
বার্ড ফ্লু ভাইরাসের বিশেষ একটি প্রজাতি বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ‘নেচার মাইক্রোবায়োলজি’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর বেরিয়েছে। ইউরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বার্ড ফ্লু ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন, খুব দ্রুত ‘মিউটেশন’ বা জিনের রাসায়নিক বদল হচ্ছে এই ভাইরাসের। ফলে নতুন নতুন প্রজাতির জন্ম হচ্ছে। তার মধ্যে একটি প্রজাতি বাতাসে ভেসেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এখনও অবধি বার্ড ফ্লু তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের যে দুই প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, তারা হল— এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। তবে আমেরিকায় গত কয়েক মাসে এমন এক প্রজাতির বার্ড ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে, যাতে খামারের পর খামারে মড়ক লেগে গিয়েছে। এমনকি আক্রান্ত পশু ও পাখির থেকে মানুষের শরীরেও ভাইরাস ছড়াতে দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এইচ৫এন১ ভাইরাস তার জিনগত বিন্যাসের বদল ঘটিয়ে আরও সংক্রামক হয়ে উঠেছে। আগে কেবল আক্রান্তের সংস্পর্শ থেকে ভাইরাস ছড়াত। কিন্তু এই প্রজাতি এখন বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা বা জলকণাকে আশ্রয় করে বহু দূর অবধি ভেসে যেতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ওই প্রজাতি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। ভাইরাসে কী ধরনের বদল হচ্ছে, সে দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই ভাইরাসও যদি বাতাসে ভেসে ছড়াতে শুরু করে, তা হলে একই সময়ে বহু পশুপাখি আক্রান্ত হবে, মানুষের জন্যও তা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।
তবে এখনই এই ভাইরাসকে ‘বিপজ্জনক’ বলতে চাইছেন না চিকিৎসকেরা। বলা হচ্ছে, মানুষের শরীরে এই ভাইরাস ঢুকলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই উপসর্গ দেখা দেবে। নাক-মুখ দিয়ে জল পড়া, হাঁচি-কাশি, গায়ে, হাত, পায়ে ব্যথা হবে। জ্বর আসবে। শ্বাসের সমস্যা হতে পারে। গলায় ব্যথাও হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এই সব লক্ষণ যদি দেখা দেয়, তা হলে ভাইরাল প্যানেল টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। চিকিৎসক যদি বোঝেন, শরীরে ভাইরাসের স্ট্রেন রয়েছে, তা হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু হবে।