ওজন ঝরানো খুব সহজ নয় ঠিকই, তবে ৮ নিয়ম মানলে ফল মিলবে হাতেনাতে। ছবি: সংগৃহীত।
ওজন এক বার বাড়তে শুরু করলে, তা কমানো মোটেই মুখের কথা নয়। তার উপর যদি ভুঁড়ি হয়ে যায়, তাকে বাগে আনতেও যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়। ওজন কমাতে যে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, তা বার বারই বলেছেন ফিটনেস নিয়ে চর্চায় থাকা শিল্পা শেট্টি থেকে জন আব্রাহামের মতো তারকারা। কিন্তু শুধু খাওয়ায় রাশ টানলেই হবে না, দরকার শরীরচর্চারও। সঙ্গে আর কী করতে হবে, সে ব্যাপারেই পরামর্শ দিলেন ফিটনেস প্রশিক্ষক সুনীল শেট্টি। সমাজমাধ্যমে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। সুস্থ থাকতে এবং আকর্ষক চেহারা পেতে কী করণীয়, তা নিয়ে মাঝেমধ্যেই তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় টিপ্স দেন তিনি। দ্রুত ওজন ঝরাতে ৮ নিয়ম অনুসরণের কথা বলছেন সুনীল।
ক্যালোরি: শারীরবৃত্তীয় নানা ক্রিয়াকলাপ, দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য প্রতিটি মানুষেরই নির্দিষ্ট ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। তা আসে খাবার থেকে। ওজন কমাতে গেলে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ জরুরি। খাবার মেপে খেতে হবে। পাশাপাশি, শরীরচর্চার মাধ্যমে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরাতে হবে। ওজন দ্রুত কমবে, যদি প্রতি দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি হয়। তবে না খেয়ে ক্যালোরি কমানো কোনও কাজের কথা নয়। তা ঝরাতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে।
পানীয়: ক্যালোরি মেপে খাওয়া মানে যা-তা খাওয়া নয়। বাদ দিতে হবে বাজারচলতি ফলের রস, সোডা জাতীয় বা কার্বোনেটেড পানীয়। বদলে সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া দরকার। চুমুক দেওয়া যেতে পারে গ্রিন টি, ভেষজ চা, চিনি ছাড়া কালো কফিতে।
ওজন নিয়ে ব্যায়াম: ভুঁড়ি কমিয়ে সুন্দর চেহারা পেতে ওজন নিয়ে ব্যায়াম জরুরি। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন। এতে মেদ ঝরে দ্রুত, পেশি মজবুত হয়। স্কোয়াট, ডেড লিফ্ট, পুশ-আপ মিলিয়ে মিশিয়ে ২০-৩০ মিনিট করলে ভাল ফল মিলবে।
প্রোটিন: মাছ, মাংস, ডিম, টোফু, সয়াবিন— এই ধরনের খাবার থেকে মিলবে প্রোটিন। বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধিতে, ওজন ঝরাতে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতেই হবে। প্রোটিন খেলে দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে উল্টো-পাল্টা খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও এতে কমে যায়।
সব্জি: প্রতি দিনের খাবারে ভিটামিন এবং ফাইবার জরুরি। সে সব আসবে রকমারি সব্জি এবং ফল থেকে। তালিকায় পালংশাক, ব্রকোলি, গাজরের মতো সব্জি রাখা প্রয়োজন। প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের সমন্বয় রেখে খাবার বাছাই করতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম ওজন ঝরানোর জন্য খুব জরুরি। ঘুম ঠিক না হলে শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মে প্রভাব পড়ে। হরমোনের ভারসাম্যও এতে নষ্ট হতে পারে। হজমে সমস্য হলে, বিপাকহার কমে গেলে তার প্রভাব পড়বে ওজনে।
হাটাহাঁটি: সকাল-সন্ধে নিয়ম করে হাঁটতে পারলে ভাল। তবে দৈনন্দিন কাজকর্মেও কিন্তু হাঁটা হয়ে যায়। যে ভাবেই হোক, ওজন ঝরাতে হলে সারা দিনে ১০ হাজার পা হাঁটা জরুরি।
উপভোগ্য হয় যেন: ওজন কমানোর লক্ষ্যে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, শরীরচর্চা জোর করে করতে হচ্ছে ভাবলে কাজ কঠিন হতে বাধ্য। বদলে যদি ভাজাভুজি জাতীয় খাবার স্বাস্থ্যের জন্যই বাদ দেওয়া হচ্ছে ভাবা যায়, শরীরচর্চা উপভোগ করা যায়, তা হলে ওজন কমার পরেও তা বশে রাখতেও সমস্যা হবে না।