ঘরের কাজেই মেদ ঝরবে। ছবি: সংগৃহীত।
ওজন বেড়েই চলেছে। এ দিকে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর সময় নেই। মেপে খাওয়াদাওয়া করেও তেমন কোনও ফল হচ্ছে না। ভাবছেন, যোগব্যায়াম শুরু করবেন। কিন্তু, অফিস-বাড়ি সামলে তার জন্য সময় বার করা যাচ্ছে না। অথচ মন খুঁতখুঁত করছে, ওজনটা কমাতেই হবে। তা হলে উপায়? সংসারে ছোট ছোট এমন অনেক কাজ আছে, যা নিয়মিত করলে ওজন কমতে বাধ্য। ভেবে দেখুন না, আগেকার দিনে মা-ঠাকুমারা কি জিমে যেতেন? সংসার সামলেও তাঁদের চেহারা থাকত ছিপছিপে। হোটেল-রেস্তরাঁয় খাওয়ারও তেমন চল ছিল না তখন। বাড়ির খাওয়া আর ঘরের কাজ— তাতেই স্বাস্থ্য ভাল থাকত।
সংসারে এমন কী কী কাজ আছে, যা মেদ ঝরাবে চটজলদি?
ঘর ঝাঁট দিয়ে মুছুন
ভাববেন না খুব সহজ। আধুনিক মপ দিয়ে ঘর মুছে ফেললে কিন্তু হবে না। কোমর ঝুঁকিয়ে ঘর ভাল করে ঝাঁট দিয়ে তার পর হাঁটু মুড়ে বসে ঘর মুছুন। পেট চেপে মাটিতে বসে ঘর মুছতে হবে। বারে বারে উঠে কাপড় ভিজিয়ে নিন। ওঠাবসায় পেশি ও অস্থিসন্ধির নমনীয়তা বাড়বে। স্ট্রেচিং করার মতোই ব্যায়াম হবে। ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ২৫০ ক্যালোরি বার্ন হবে।
জানলা-দরজা মুছুন
বাড়ির জানলা বা দরজা নিজেই মুছুন। হাত উঁচু করে দরজার উপর দিক মুছুন, তার পর নীচের দিকটা মোছার সময় হাঁটু মুড়ে বসুন। বার বার ওঠাবসা করতে করতে কাজ করুন। জানলাও তাই। এই কাজে হাত ও পায়ের খুব ভাল স্ট্রেচিং হয়। যখনই স্কোয়াট করি, দাঁড়ানোর আগে এক-একটা পোজ় কিছু ক্ষণ ধরে রাখতে হয়। এতে পা, থাইয়ের গড়ন টোন্ড হয়। এই কাজে ঘণ্টায় অন্তত ১০০ থেকে ২০০ ক্যালোরি পুড়বে।
জামাকাপড় নিজেই কাচুন
ওয়াশিং মেশিনে বার বার জামাকাপড় ধোয়ার অভ্যাস ছাড়ুন। আগে যেমন বালতিতে ভিজিয়ে, বসে কাপড় কাচতে হত, সে ভাবেই কাচুন। নীচু হয়ে কাপড় কাচা, উঠে দাঁড়িয়ে কাপড় নিংড়ানো ও শেষে কাপড় মেলা, এই সব কাজে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ২০০ ক্যালোরি ঝরতে পারে।
জামাকাপড় ইস্ত্রি করুন
জামাকাপড় ধোয়ার পর যদি ইস্ত্রি করাটাও নিজে হাতে করতে পারেন, জানবেন ওজন কমানোর লক্ষ্যে এগিয়ে গেলেন।
বাথরুম পরিষ্কার করুন
রান্নাঘরের বা বাথরুমের দেওয়ালের টাইল্স বা মেঝে কখনও পরিষ্কার করেছেন কি? যদি না করে থাকেন, এ বার থেকে মোটা স্ক্রাবার এবং এক বোতল ক্লিনার নিয়ে লেগে পড়ুন। পেটের পেশি শক্ত রাখা ও তলপেটের মেদ কমানোর জন্য এটি দারুণ ব্যায়ামের কাজ করে। পেটের সঙ্গে হাতের গঠনও এতে সুঠাম হয়। যখন আপনি সামনে ঝুঁকে মেঝে স্ক্রাবার দিয়ে ঘষছেন, অজান্তেই কিন্তু প্লাঙ্ক করছেন। এতে সারা শরীরের গঠন ভাল হবে।
রান্না করাও ভাল ব্যায়াম
সারা সপ্তাহ যদি সময় না-ও পান, তা হলে ছুটির দিনে চেষ্টা করুন রান্না করার। সব্জি নিজের হাতে কেটে, মশলা বেটে, খুন্তি নেড়ে রান্না করলে হাত ও কোমরের ভাল ব্যায়াম হয়। আগেকার দিনে শিলনোড়ায় মশলা বাটা হত, হাতে হাতের খুব ভাল ব্যায়াম হত। হাতের পেশি মজবুত হত। যদি বাড়িতে শিলনোড়া থাকে, তা হলে এক বার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।