Yash Dasgupta

Yash Dasgupta: সঙ্গিনীর ব্যক্তিজীবন নিয়ে আমি কথা বলব কেন, ওকেই জিজ্ঞাসা করুন, বললেন যশ

যশ জানালেন, ভাল আছেন নুসরত, ছেলে ঈশান। একই সঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘আমি কখনও ব্যক্তিগত জীবন সবার সামনে আনিনি। আগামী দিনেও আনব না।’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২১ ১২:৫৫
নুসরতের সঙ্গে যশ।

নুসরতের সঙ্গে যশ।

আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি হয়ে নিজে থেকেই যশ দাশগুপ্ত জানালেন, ভাল আছে নুসরত, ছেলে ঈশান। তার পরেই কড়া নির্দেশ, ‘‘ব্যস, আর কোনও ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়’’...

প্রশ্ন: ‘ছোট পর্দা, ওয়েব সিরিজে যশ ফিরছেন’, এই খবরের পর বাস্তবে অভিনয় করতে চলেছেন ‘অন্য ধারা’র ছবিতে...

যশ: এই ধরনের অনেক খবর আমিও মাঝখানে পাচ্ছিলাম। যার অর্ধেক নিজেই জানতাম না! বরাবরই কাজকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। তাই এই ধরনের গুজবে গুরুত্ব দিইনি। আবার এটাও ঠিক, ‘চিনে বাদাম’-এর মতো অন্য ধারার ছবিতে অভিনয় করব, সেটা আগে থেকে পরিকল্পনা করিনি। রাজি হয়েছি কারণ, এনা সাহার সঙ্গে এই নিয়ে আমার দ্বিতীয় কাজ। একটা বোঝাপড়া ওঁর গত বছরের ছবি ‘এসওএস কলকাতা’ থেকেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। এনা ঠাণ্ডা মাথার মেয়ে। একই সঙ্গে অভিনয় এবং প্রযোজনা সব কিছু সামলাতে পারেন। পাশাপাশি আগে কাজ না করলেও জানি, শিলাদিত্য মৌলিক মানেই অন্য ধারার ছবি। যে ছবি আমি আগে করিনি। কিন্তু কাজ করার আগ্রহ ছিল। এক ছাদের নীচে আমার দুই পছন্দ মিলতেই দ্বিতীয় বার আর ভাবিনি। এই সুযোগে অভিনয়ের অন্য ধারাটাও শেখা হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: গত একটা বছর যশ রাজনীতির ময়দানে দৌড়েছেন। সেই ‘শেখা’টা কেমন ছিল?

যশ: আমার বিশ্বাস, এরও দরকার ছিল। এও মনে করি, জীবনের কোনও শিক্ষাই ফেলা যায় না। তাই নির্বাচনে জেতা-হারা নিয়ে আমার কোনও আফসোস নেই। আর রাজনীতি নিয়েও খুব তাড়াতাড়ি কথা বলব সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।

প্রশ্ন: ইতিমধ্যেই সহ-অভিনেতা বন্ধুরা বিজেপি ছাড়ছেন। দলের বিরুদ্ধে অভিযোগও জানাচ্ছেন। আপনি দল বদলাবেন না গেরুয়া শিবিরেই আস্থা রাখবেন?

যশ: প্রথমেই বলি, অভিনয়ের মতোই রাজনীতিও আমার পেশা। আমার দ্বিতীয় পেশা। তাই কিছু সিদ্ধান্ত নিলে সেটা সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশ পাবে। আর কারা, কী নিয়ে মুখ খুলছেন সে বিষয়ে আমি খুব ওয়াকিবহাল নই। ফলে, সে সব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

Advertisement
রাজনীতির ময়দানে যশ।

রাজনীতির ময়দানে যশ।

প্রশ্ন: যশের ছবিতে নায়িকা মানেই মধুমিতা, মিমি নয় নুসরত। যশ-এনার রসায়ন নিয়ে কতটা আশাবাদী?

যশ: আমি যথেষ্ট আশাবাদী। একটি ছোট মেয়ে যদি প্রযোজনার মতো গুরুত্বপূর্ণ দিক সামলাতে পারে, তা হলে অভিনয়ও পারবে। তাছাড়া, আগের ছবিতে ওর সঙ্গে কাজের ভাল অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, সেটা সাহায্য করবে। এনা কিন্তু সেটে নায়িকাদের মতোই ‘ট্যানট্রাম’ দেখায়! মনেই রাখে না, ও প্রযোজক। ফলে, ভুলেও ওর অবমূল্যায়ন করবেন না।

প্রশ্ন: ছবির ট্যাগলাইন, ‘চিনে বাদাম’ একা খেলে খাবার। ভাগ করে খেলে বন্ধুত্ব। এই অভিজ্ঞতা আছে?

যশ:
বাদাম খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু এক ঠোঙা থেকে খাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। সেটাও হয়ে যাবে এনা আর শিলাদিত্যের দৌলতে। পর্দায় হয়তো আমাদের এক ঠোঙা থেকে চিনে বাদাম খেতে দেখবেন দর্শক (হাসি)। তবে ‘চিনে বাদাম’ বললেই এক সঙ্গে অনেক পুরনো কথা মনে পড়ে যায়। যেমন, চিঠি লেখা। যেমন, নিজের হাতে গ্রিটিংস কার্ড বানিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া। আমিই কত গ্রিটিংস কার্ড নিজের হাতে বানিয়েছি। মাকে উপহার দিয়েছি। এখন সবাই প্রযুক্তির হাতে বন্দি। এক ঘরে বসে থাকা চারটে মানুষ নিজেদের মতো করে মুঠোফোনে ব্যস্ত। এখনকার প্রজন্ম এসব জানেই না।

মধুমিতা সরকার এবং যশ দাশগুপ্ত।

মধুমিতা সরকার এবং যশ দাশগুপ্ত।

প্রশ্ন: ‘চিনে বাদাম’ কি প্রযুক্তির অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে পারবে? আপনি পারেন মুঠোফোন, নেটমাধ্যম থেকে দূরে থাকতে?

যশ:
‘চিনে বাদাম’ কিন্তু প্রযুক্তি থেকে সরতে বলবে না। অত্যধিক ব্যবহারের অপকারিতার কথা বলবে। আমরা অত্যধিক প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছি বলেই হয়তো সম্পর্কে সেই আগের বাঁধন নেই। এক জনের সম্পর্কে যথেচ্ছ ভুল খবর ছড়িয়ে পড়ছে। যেমন, আমার কথাই ধরুন। হয়তো এক মানসিকতা নিয়ে ইনস্টাগ্রাম বা টুইটারে একটি কথা বা কারও লেখা ব্যবহার করলাম। দিনের শেষে দেখলাম সেটা নিয়েই সংবাদমাধ্যম তিল থেকে তাল বানিয়ে দিল! আমিও প্রযুক্তি ছাড়া চলতে পারব না। তবে চেষ্টা করলে ব্যবহার হয়তো কমাতে পারব। চিনে বাদামের মতো পুরনো কিছু অভ্যেস ফিরলে হয়তো এগুলো আটকানো যাবে।

প্রশ্ন: আপনিও যদি সংবাদমাধ্যকে না এড়িয়ে সরাসরি মুখ খোলেন তা হলে হয়তো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ কমে...

যশ:
আমি ছোট থেকে আজ পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবন কারও সামনে আনিনি। আগামী দিনেও আনব না। তা হলে ‘ব্যক্তিগত’ শব্দটার মানেই থাকে না! যেটুকু জানানোর ঠিক জানাব। যেমন, বরাবর সবাই জানতে পারছেন। এই যে,হঠাৎ একদিন ভুয়ো খবর ছড়িয়ে গেল নুসরত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। ও ভর্তি হলে, সন্তানের জন্ম দিলে কেন সেটা চেপে রাখব! তাছাড়া, সব কথা আমি একা বলব কেন? আমার সঙ্গিনীরও হয়তো কিছু বলার থাকতে পারে। সেটা ওর মুখ থেকে শোনাই বোধহয় ভাল।

যশ।

যশ।

প্রশ্ন: আজকের প্রজন্ম যশের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করছে। তাদের জন্য কোনও টিপস?

যশ:
আমি বিশাল কিছু করছি না। মন থেকে যে কাজে সায় পাচ্ছি সেটাই করছি। তাই হয়তো চলতে পারছি। তাই এটুকু বলতে চাই, নিজের মনের কথা শুনলে অনেক সময় সমস্যার সমাধান হয়। পথের দিশা পাওয়া যায়। নিজের বিবেচনায় চললে সাফল্য আসবে।

প্রশ্ন: যে ছোট পর্দা যশকে আক্ষরিক অর্থেই ‘যশ’ দিয়েছে সেখানে ফিরবেন?

যশ:
অভিনেতার কাছে সব মাধ্যমই সমান। দিনের শেষে দর্শকের কাছে পৌঁছনো তার মূল লক্ষ্য। সেই জায়গা থেকে বলব, আমি অভিনয় করে যেতে চাই। যে কোনও মাধ্যমে। সব মাধ্যমের সঙ্গেই কথা চলছে। বেশ কিছু ওয়েব সিরিজ নিয়েও ভাবনা আছে। পছন্দ হলে আগামী দিনে সেখানেও দর্শকেরা তাঁদের প্রিয় ‘অরণ্য সিংহ রায়’-কে দেখতে পাবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement