রেকর্ড করল ‘বেলাশুরু’
বিধাননগর আবাসন থেকে এসেছেন তিনি। সঙ্গী হুইল চেয়ার। ছেলে বিলেত থেকে টিকিট কেটে দিয়েছেন। ছবির নাম ‘বেলাশুরু’। প্রেক্ষাগৃহের সামনে দাঁড়িয়ে পরিচালক-প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন বিভাসবাবু, “যত দিন বেঁচে থাকব, আপনাদের ছবি দেখব।”
‘বেলাশুরু’-র ঝুলিতে তিন দিনে এক কোটি চল্লিশ লক্ষ। কী বলছেন শিবপ্রসাদ? “আমাদের ছবি ‘পোস্ত’, ‘প্রাক্তন’, ‘হামি’ সবাইকে ছাড়িয়ে বাণিজ্যিক দিক থেকে এগিয়ে গেল ‘বেলাশুরু’। তবে বাংলা ছবিকে আরও ব্যবসা করতে হবে।”
নবীনা প্রেক্ষাগৃহের মালিক নবীন চোখানি ‘বেলাশুরু’-র দর্শক নিয়ে রীতিমতো অবাক। তিনি বললেন, “এমন দর্শকদের এই ছবি দেখতে আসতে দেখছি যাঁদের গত তিন বছর প্রেক্ষাগৃহে দেখতেই পাইনি।এঁরা সব কোথায় ছিলেন?” ছবির পরিবেশক বাবলু দামানি জানাচ্ছেন এ ছবি এক ভাবে সাত-আট সপ্তাহ টেনে দেবে। তিনি বললেন, “যে পরিবারের কথা মানুষ আজ ভুলতে বসেছে, সেই পরিবার যে কত জরুরি তা ‘বেলাশুরু’ বুঝিয়ে দিচ্ছে। শহর হোক, গ্রাম হোক, যে কোনও মানুষ এই ছবি দেখবে।দেখছেও।”
মঙ্গলবার ভরা বৃষ্টিতে স্টার থিয়েটারের প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ। স্টার থিয়েটারের পক্ষ থেকে জয়দীপ বললেন, “নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ছবি মানেই মানুষ নিজেদের জীবনের সঙ্গে তা যুক্ত করেন। ঝড়জল মাথায় করে দু-তিন বার করে ছবিটি দেখতে যাচ্ছে লোকে আর কী চাই?”
জয়া প্রেক্ষাগৃহের মনোজিৎ মালিক বাংলা ছবির বাণিজ্যে লক্ষ্মীলাভের বিষয়টি বিশদ ভাবে দেখছেন। তাঁর মতে, “খুব ভাল লাগছে এটা দেখে যে ‘অপরাজিত’ যেমন চলছে তেমনি ‘বেলাশুরু’-ও চলছে।এমন নয় বাংলা ছবির দর্শক ভাগ হয়ে যাচ্ছে। বরং দর্শক দুটো ছবিই দেখছে। বাংলা ছবি আরও ছড়িয়ে যাচ্ছে।”
বাংলায় ১০৫টি প্রেক্ষাগৃহে ‘বেলাশুরু’ মুক্তি পেয়েছে। অশোকা প্রেক্ষাগৃহের মালিক প্রবীর রায় বললেন, “ যে সব বয়স্ক দর্শক এই ছবি দেখতে আসছে তাঁরা ঘর থেকেই বেরোতেই পারেন না। কিন্তু কোনও মতে দেখতে পাচ্ছি ছবি দেখতে আসছেন। এটা চমকে দিয়েছে আমায়। কলেজের ছেলেমেয়েরা তো ছবি দেখতে আসেই কিন্তু এঁদের আশা আমাদের এই ছবি নিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গ না হয় ‘বেলাশুরু’ করল। কিন্তু দেশের অন্যান্য প্রান্তের বাঙালি? তাঁরা কি বঞ্চিত হবেন? বাবলু দামানি জানাচ্ছেন আর কয়েক দিনের অপেক্ষা, খুব শিগগিরই দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বেলা শুরু হবে।