ছবি নির্মাতারা কি হাল ছেড়ে দিয়েছেন?
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে মাতামাতির মরসুমে মুখে খুলেছিলেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। বলেছিলেন, বলিউডের এই ‘বোকা প্রতিযোগিতায়’ থাকতে চান না। যে যার সঙ্গে খুশি ইঁদুরদৌড় খেলুক। তিনি বরং দূরে থেকে হাসির খোরাক হবেন, তবু ভাল।
যদিও দেখা গেল, বলিউডের ভরাডুবির পরিস্থিতিতে একেবারে চুপচাপ বসে থাকার মানুষ নন বিবেক। কী ভাবে এগোলে আবার ঘুরে দাঁড়াবে ইন্ডাস্ট্রি, তা নিয়ে রবিবার আরও এক বার মত প্রকাশ করলেন তিনি। টুইটারে লিখলেন, ‘প্রযোজনার খরচ কম করা হোক। তারকারা কম পারিশ্রমিক নিন। কম ঔদ্ধত্য প্রকাশ করুন। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে পোজের ঘনঘটা বন্ধ করে ভাবনাচিন্তার অভ্যাস করলে ভাল হয়। গবেষণা না হলে ভাল উপাদান আসবে কী করে ছবিতে? দেশের কথা উঠে আসবে কী করে?’
কিছু দিন আগেই এক দীর্ঘ টুইটে বলিউডের অন্ধকার দিকটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বিবেক। লিখেছিলেন, ‘আপনি যা দেখছেন, তা বলিউড নয়। বাস্তবের বলিউডকে খুঁজে পাওয়া যাবে অন্ধকার গলিতে। এই অন্ধকার গলিতে আপনি খুঁজে পেতে পারেন ছিন্নভিন্ন, পদদলিত, সমাহিত স্বপ্ন। বলিউড যদি প্রতিভার জাদুঘর হয়, তবে প্রতিভার কবরখানাও বটে। এটা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ব্যাপারে বলছি না। যিনিই এখানে আসেন, জানেন যে, প্রত্যাখ্যান চুক্তিরই অংশ। কিন্তু সম্মান, আত্মমর্যাদা এবং আশা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। কোনও মধ্যবিত্ত যুবক কখনও এমন অবস্থায় থাকার কথা কল্পনাও করেন না, যে পরিস্থিতিতে বলিউডে এসে থাকতে হয়।’
বহু সংগ্রামের পর সাফল্য না-ও আসতে পারে। যাঁদের আসে না, তাঁদের সম্পর্কে বিবেক লিখেছেন, ‘‘সব কিছু এতটাই আঘাত করে যে, লড়াই করার পরিবর্তে অনেকে হাল ছেড়ে দেন। ভাগ্যবান তাঁরা, যাঁরা ঘরে ফিরে যান। যাঁরা থাকেন, ভেঙে চুরমার হয়ে যান।’’
বিবেকের এই বিস্ফোরক লেখাটিতে বলা রয়েছে আপাত-সফলদের বৃত্তান্তও। ক্ষণিকের উজ্জ্বলতার পর প্রদীপের নীচের অন্ধকারের মতোই ইন্ডাস্ট্রির কদর্য দিকটি যাঁদের দৌলতে দৃশ্যমান হতে থাকে।
বিবেকের মতে, বলিউড কেবল প্রতিভা প্রকাশের জায়গা নয়, প্রতিভা বিসর্জনেরও। কত উচ্চাশা নিয়ে তরুণ মুখের দল ভিড় করে বলিউডে। কিন্তু তার পরই স্রোতে খড়কুটোর মতো ভেসে যায়। বর্তমানে ছবি নির্মাতা থেকে শুরু করে কলাকুশলী— সকলেই স্রোতে গা ভাসিয়েছেন বলে মনে করছেন বিবেক। তাঁরা সচেতন না হলে পরিস্থিতি ফেরানো মুশকিল, এই বলেই হুশিয়ারি দিলেন নেটমাধ্যমে।