Ushasie Chakraborty

Ushasie Chakraborty: বাবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতেও বিতর্ক! পোশাক নিয়ে ঊষসীকে কটাক্ষ নেটমাধ্যমে

ঊষসীর দাবি, ‘‘এই নীতিপুলিশির জেরে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত। কথায় কথায় বাবার উদাহরণ!’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২১ ১৬:১৭
ঊষসী চক্রবর্তী এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী।

ঊষসী চক্রবর্তী এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ৬ অগস্ট প্রয়াত হন সিপিএমের শীর্ষনেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী। বাবার আকস্মিক মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছিল অভিনেত্রী-কন্যা ঊষসী চক্রবর্তীকে। ছোটবেলায় মা’কে হারিয়েছিলেন ঊষসী। বাবার মৃত্যুতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি একেবারে একা হয়ে গিয়েছিলেন! পিতৃবিয়োগের ব্যথা উপলব্ধির সুযোগটুকুও পাননি। এক বছর পরে ২০২১ সালের ৬ অগস্ট, শুক্রবার তিনি টের পাচ্ছেন মহাশূন্যতা। তাঁকে গ্রাস করেছে চরাচর ঢেকে যাওয়া বিষণ্ণতা। ফ্রেমে বাঁধানো বাবার ছবির সামনে বসে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে উষসী তাঁকে স্মরণ করেছেন। অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে ‘বাবা’ বলে ডেকেও ফেলেছেন একবার। কিন্তু সেই ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে পোস্ট করতেই শুরু হয়েছে নেটাগরিকদের নীতিপুলিশি। জনৈক নেটাগরিক তাঁর পুরনো স্থিরচিত্রের প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ ছুড়েছেন, হটপ্যান্ট পরা ছবি ভাগ করে অভিনেত্রী-কন্যা যেন বাবাকে অসম্মান না করেন!

ওই নেটাগরিক পর্দার জুন আন্টিকে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘বাবার প্রতি জনগণের শ্রদ্ধার কথা মনে রেখে দয়া করে ছোটো বা হটপ্যান্ট পরে ফেসবুকে ছবি দেবেন না..’! ওই বিষয়ে কথা বলতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ঊষসীর সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘‘এই নীতিপুলিশির জেরে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত! ছোট পোশাকের কোনও ছবি সামাজিক পাতায় ভাগ করে নিলেই এই সমস্যা। তার নীচে গাদাগাদা মন্তব্য। অযাচিত জ্ঞান দান! কথায় কথায় বাবার উদাহরণ।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমি কি জানি না আমার বাবা কেমন! তিনি কী চাইতেন?’’

Advertisement

ঊষসীর বক্তব্য, তাঁর বাবা আদ্যন্ত খোলামনের মানুষ ছিলেন। মেয়েদের পোশাক নিয়ে কথা বলা মানে যে তাঁদের অসম্মান করা, তাঁর বাবা সেটা জানতেন। তাই অভিনেত্রী কন্যার কোনও কিছু নিয়েই কোনও দিন তিনি কিচ্ছু বলেননি। ঊষসীর দাবি, ‘‘হটপ্যান্ট পরলেও না!’’ একই সঙ্গে কমিউনিস্ট নেতা শ্যামল চক্রবর্তী ছিলেন ভীষণ ‘রোম্যান্টিক’। বরাবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের গান তাঁকে টানত। মৃত্যুর কিছুদিন আগেও দোলপূর্ণিমার চাঁদ দেখবেন বলে অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে এসেছিলেন। নিজের ফেসবুক পোস্টে সে কথা লিখেছেন ঊষসী। গেয়েছেন প্রেমের গান। বাবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রেমের গান কেন? ঊষসীর বক্তব্য, ‘‘জানি মৃত্যুবার্ষিকীতে কেউ প্রেমের গান গায় না। আমি গাইলাম। কারণ, এই প্রেমের গানটি আমার মায়ের প্রিয়তম ছিল। সেই সূত্রে বাবারও। তবু শোক সরিয়ে বাবার জন্য ‘ও যে মানে না মানা’-র মতো গানটাই বেছেছি। বাবার ভাল লাগাকে সম্মান জানাব বলে।’’ ফেসবুক পোস্টে ঊষসী লিখেছেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমার যা ট্রেনিং, তাতে কোনওদিনও পরলোক বলে কোথাও কিছু আছে বলে শিখিনি। মৃত্যুর পর মানুষ প্রকৃতির মধ্যে বিলীন হয়ে যায়, এ রকমটাই জেনে এসেছি বরাবর। তবু মনে হচ্ছে, যাঁরা বিশ্বাস করেন মৃত্যুর পরেও কোনও একটা ভাবে মানুষ রয়ে যান, দূর থেকে দেখতে পান সব কিছু, তাঁদের জীবন ঈর্ষণীয় ভাবে সুখের। অন্তত আজকের জন্য তাঁদের মতো করেই ভাবতে ইচ্ছে করছে।’

বাবার জন্য শূন্যতা এবং অভাববোধের পাশাপাশি বাবাকে নিয়ে কোনও আক্ষেপ আছে ঊষসীর? আছে। জানাচ্ছেন কন্যা। শ্যামল চক্রবর্তী তাঁর লেখা বই ‘ছাত্র আন্দোলন’-এর দ্বিতীয় খণ্ড লিখতে চেয়েছিলেন। অসুস্থতার জন্য নিজে লিখতে পারতেন না। তাই মেয়ে বাবার জন্য এক জন অনুলেখকও জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু মার্চ মাস থেকে লকডাউন শুরু হওয়ায় সেই কাজে আর হাত দেওয়া হয়নি। ঊষসীর বক্তব্য, তাঁর বাবা লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত থাকলে বাইরে বেরোতেন না। তা হলে হয়তো এ ভাবে চলেও যেতে হত না তাঁকে।

Advertisement
আরও পড়ুন