মহড়ায় ‘রুদ্র পলাশ’-এর শিল্পীরা। ছবি: সংগৃহীত।
ঋতুপর্ণ ঘোষের জীবন ও সফর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। তাই, গত দশ বছর ধরে ৩১ অগস্ট, প্রয়াত পরিচালকের জন্মদিনে তাঁকে বিশেষ ভাবে স্মরণ করেন রূপান্তরকামী নৃত্যশিল্পী মেঘ সায়ন্তনী। এ বারও নাচের মাধ্যমেই ঋতুপর্ণ ঘোষকে শ্রদ্ধা জানাবে সায়ন্তনীর নাচের দল ‘রুদ্রপলাশ’। নাচের অনুষ্ঠানে ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবির দশ জন কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রকে তুলে ধরা হবে। সেই চরিত্রগুলিতে তৃতীয় লিঙ্গের শিল্পীদেরই দেখা যাবে।
মেঘ সায়ন্তনী বলেন, “রূপান্তরকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্যে ঋতুপর্ণ ঘোষ এক শক্তিশালী কণ্ঠ ছিলেন। তাই ওঁকে উৎসর্গ করে আমরা প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান করি। আমার লক্ষ্য, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের শিল্পসত্তা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া। গত বছর আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্রাঙ্গদা’ অবলম্বনে একটি আলেখ্য করেছিলাম। এ বার ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবির বিভিন্ন নারী চরিত্র উঠে আসবে আমাদের অনুষ্ঠানে।”
রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও প্রতিবাদ রয়েছে এই অনুষ্ঠানে। শিল্পীর কথায়, “বর্তমান পরিস্থিতির কথাও মাথায় রয়েছে আমাদের। আমাদের মতে, প্রতিবাদ বহমান। প্রতিবাদ কখনও থেমে থাকে না। ধারণা বদলায়, সময় বদলায়। কিন্তু প্রতিবাদ এগিয়ে চলে। এই ভেবেই অনুষ্ঠানের নাম দিয়েছি, ‘নূতন প্রাণ দাও’।”
আরজি কর প্রসঙ্গে নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে মেঘ সায়ন্তনী বলেন, “যে রাজ্যে বা যে দেশে নারীদের সুরক্ষা নেই, সেখানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে তো নানা ঘটনা ঘটেই থাকে। এমনও হয়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানালেও পুলিশ তা নিতে চায় না।”
মেঘ সায়ন্তনী পেশায় আইনজীবীও। তিনি বলেন, “আমি আইনজীবী হিসেবেই দেখেছি বহু মানুষের অভিযোগই নেওয়া হয়নি। রূপান্তরকামীদেরই আজও বহু মানুষ মেনে নিতে পারেনি। একটা লিঙ্গবৈষম্যহীন আইন দরকার। নারীদের জন্য যেমন শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে আইন রয়েছে। তেমনই পুরুষ ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্যও হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর জ্ঞান মঞ্চে ‘রুদ্র পলাশ’-এর এই অনুষ্ঠান। সমগ্র অনুষ্ঠানের গ্রন্থনা করেছেন মেঘ সায়ন্তনী ও সুজয় রুদ্র।